নাটোর-২ (সদর ও নলডাঙ্গা) আসনের বিএনপি প্রার্থী ও দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুর বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে মূল বাড়িতে আগুন না লাগলেও বাড়ির সামনে রাখা মোটরসাইকেল পুড়েছে। গতকাল শহরের আলাইপুর স্টেশন রোডসংলগ্ন দুলুর বাড়িতে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আওয়ামী লীগের প্রতি অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন, হেলমেট পরিহিত ১০ থেকে ১৫ জন মোটরসাইকেল আরোহী হামলা চালিয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে পালিয়ে যান। তবে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এটা বিএনপির সাজানো নাটক।
নাটোর থানার পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপি নেতাদের সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা ছয়টায় দুলুর বাসভবনের সামনের দরজা দিয়ে (ভবনের নিচতলায় জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়) লাঠি হাতে হেলমেট পরিহিত এক যুবক ভেতরে ঢোকেন। এ সময় বাড়ির কেয়ারটেকার ও আমিনুল ইসলাম নামের এক বিএনপি কর্মী তাঁকে বাধা দিলে তিনি আমিনুলকে লাঠিপেটা করেন। এ সময় সেখানে বিএনপির নির্বাচনী প্রস্তুতি সভা চলছিল। সেখান থেকে নেতা-কর্মীরা উঠে এলে হেলমেট পরা ওই যুবক বাইরে চলে আসেন। তখন সেখানে থাকা আরও কয়েকজন হেলমেট পরা যুবক ওই বাসভবনের জানালার কাচে ইট ছুড়তে থাকেন। একই সময় বাসার সামনে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন লাগানো হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গিয়ে আগুন নেভান।
বাড়ির কেয়ারটেকার আহম্মদ উল্লাহ বলেন, হেলমেট পরা এক যুবককে ভেতরে ঢুকতে বাধা দিলে তিনি উত্তেজিত হয়ে লাঠিপেটা শুরু করেন। এররপ ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে।
জেলা বিএনপির সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনি ওই ভবনের ভেতরে সভা করছিলেন। হঠাৎ হামলার খবর পেয়ে বাইরে এসে আগুন জ্বলতে দেখেন। এ সময় কিছু যুবক হেলমেট পরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বাজারের দিকে চলে যান। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, এটা পরিকল্পিত হামলা। আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঠে নামতে না দেওয়ার জন্য ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করছে।
ভবনের আশপাশের দুজন দোকানদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঘটনার সময় সবাই ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ হইচই শুনে তাঁরা বাইরে বের হয়ে দুলুর বাড়ির সামনে মোটরসাইকেল পুড়তে দেখেন। কারা কীভাবে আগুন লাগিয়েছে, তা তাঁরা দেখেননি।
জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সিরাজুল ইসলাম জানান, এটা বিএনপির সাজানো নাটক। দুলু নাটোরে না এসে ঢাকায় বসে কর্মীদের দিয়ে এ নাটক তৈরি করেছেন জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য। ঘটনাস্থলে জয় বাংলা স্লোগান কেউ দেয়নি। আওয়ামী লীগের কোনো নেতা-কর্মীও সেখানে ছিলেন না।
ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইদুজ্জামান ও নাটোর সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল হাসনাত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। আবুল হাসনাত জানান, আগুনের ঘটনা তো ঘটেছে। তবে কে বা কারা, কেন আগুন দিয়েছে, তা তদন্ত করে দেখা হবে।