দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৫টি স্থাপনার উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন। ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন।
মানুষকে সুরক্ষা দিতে সম্ভব সবকিছুই সরকার করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্যোগঝুঁকি প্রশমনে প্রযুক্তির ব্যবহার জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে হ্রাস করলেও জনগণকে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। তিনি বলেন, ‘আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আসছে। আমরা আধুনিক প্রযুক্তির কারণে অনেক আগে থেকেই জানতে পারি। আর এসব বিষয়ে যথেষ্ট সতর্কতা আমরা ইতিমধ্যে নিতে শুরু করেছি। ইনশা আল্লাহ, আমরা সতর্ক থাকব এবং ঝুঁকি হ্রাস করতে পারব।’
গতকাল রোববার সকালে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২২৫টি স্থাপনার উদ্বোধন এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বান্তঃকরণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কেননা, সম্পদ চলে গেলে সম্পদ পাওয়া যায়, কিন্তু জীবন চলে গেলে আর পাওয়া যায় না। এ জন্য জনসচেতনতা বেশি প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, টর্নেডো, বজ্রপাত, ভূমিধস বা ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড সবকিছুতেই মানুষকে রক্ষা করা বা সুরক্ষিত রাখার জন্য যা যা করণীয়, সে ব্যবস্থাগুলো আমরা করে যাচ্ছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, এটা বদ্বীপ। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমাদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হবে। তা ছাড়া বাংলাদেশে মাঝেমধ্যে মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগও আসে। সব মোকাবিলা করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি এবং এগিয়ে যাব।’
মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এদিন দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ১১০টি বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, ৩০টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র ও পাঁচটি মুজিব কিল্লার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি একই সঙ্গে ৫০টি মুজিব কিল্লার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সঠিক দিকনির্দেশনা, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য, আদর্শ নিয়ে চললে বাংলাদেশের মানুষকে কেউ কখনো দাবিয়ে রাখতে পারবে না। সেভাবেই দেশকে গড়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নিজের কাজ নিজে করা, বিশেষ করে যুবসমাজ যাতে নিজেরাই নিজেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে, তার ওপর জোর দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্যোগ মোকাবিলায় যে সক্ষমতা, তা আজকে সারা বিশ্বে সমাদৃত। যে কারণে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে “গ্লোবাল অ্যাডাপটেশন সেন্টার”-এর কার্যালয় বাংলাদেশে স্থাপন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘একটা ছোট্ট ভূখণ্ডের মধ্যে প্রতিনিয়ত দুর্যোগ মোকাবিলা করেও আমরা মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দিতে পারছি। সে কারণে আমাদের ওপর দায়িত্ব পড়েছে সারা বিশ্বে কীভাবে দুর্যোগ মোকাবিলা করা যেতে পারে, তার পরিকল্পনা নেওয়া, বাস্তবায়ন ও মনিটরিংয়ের।’
আওয়ামী লীগ মানুষের জন্য রাজনীতি করে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, কেবল মানুষের কল্যাণেই কাজ করেছে। আজকে ১২ বছরে ক্ষমতায় আমরা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছি, যে প্রতিশ্রুতি ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা করেছিলাম।’
পরে প্রধানমন্ত্রী নোয়াখালীর সুবর্ণচর, বরিশালের উজিরপুর ও গাইবান্ধার সাদুল্লাহপুর উপজেলার উপকারভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করেন।