মাগুরার মহম্মদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালত গতকাল মঙ্গলবার সকালে একটি মামলায় আসামির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। কিন্তু বিকেলেই আবার জামিন মঞ্জুর করেছেন। এ ঘটনায় আইনজীবীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনজীবীরা আদালতের এই নির্দেশকে ‘নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করেছেন।
মাগুরা সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া একটি দুর্নীতি মামলায় জামিনের এই নির্দেশ দেন মহম্মদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালতের হাকিম ইমতিয়াজুল ইসলাম।
আদালত ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল হান্নান আগে একই জেলার মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। মহম্মদপুরে দায়িত্ব পালনকালে তিনি উপজেলার ধুসরাইল গ্রামের চাঁদ মিয়ার স্ত্রী জহুরুন্নেছার পৈতৃক সম্পত্তি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে অন্যের নামে দালিল করে দেন। ওই ঘটনায় জহুরুন্নেছা গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মহম্মদপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দ্বিতীয় আদালতে আবদুল হান্নানকে প্রধান আসামি করে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে সাব-রেজিস্ট্রার একই আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পান। অন্য আসামিরাও জামিনে রয়েছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, অন্তর্বর্তীকালীন জামিন পেয়ে সাব-রেজিস্ট্রার পরবর্তী সময়ে মামলার ধার্যদিনে আদালতে উপস্থিত হননি। মোট ৫১ দিন অনুপস্থিত থাকার পর গতকাল মঙ্গলবার আদালতে উপস্থিত হয়ে তিনি জামিনের আবেদন করেন।
আদালতের নির্দেশে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বাদীর আইনজীবী সাজেদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা এই নির্দেশে বিস্মিত। কারণ, আমরা সাতজন আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করেছি।’ তিনি আরও বলেন, হাকিম জামিন দিয়ে সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ উপেক্ষা করেছেন। তা ছাড়া জামিন অযোগ্য ধারায় তিনি জামিন দিয়েছেন। কারণ মামলাটি ৪৬৪, ৪৬৫, ৪৭১, ৪২০ ধারাসহ বেশ কয়েকটি ধারায় করা হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছগির মিঞা জানান, তৎকালীন মহম্মদপুর সাব-রেজিস্ট্রার আবদুল হান্নানের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে থানায় আরও একটি মামলা রয়েছে। তা ছাড়া ঘুষ-দুর্নীতি ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদের মাধ্যমে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে চাকরিচ্যুতির জন্য সরকার যে ৩৮ জন কর্মকর্তার তালিকা করেছে, সেই তালিকায় আবদুল হান্নানের নাম তৃতীয় স্থানে রয়েছে।