খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় ফ্রান্সের বেগুনের বীজ লাগিয়ে সাফল্য পেয়েছেন চিরঞ্জীব চাকমা (৫০) নামে এক ব্যক্তি। উত্তর থানাপাড়া গ্রামে বাড়ির আঙিনায় বেগুন লাগিয়ে ফলনও ভালো পেয়েছেন। বেগুনে কোনো কীটনাশকও প্রয়োগ করতে হয়নি তাঁকে। পোকামাকড়ের আক্রমণও হয়নি। শখের বশে লাগানো বেগুন থেকে এখন বীজ সংগ্রহের চেষ্টা করছেন তিনি। চিরঞ্জীব নতুন জাতের এই বেগুনের নাম দিয়েছেন ফ্রান্সের বেগুন।
গতকাল শনিবার সকালে উত্তর থানাপাড়া গ্রামে চিরঞ্জীব চাকমার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির চারপাশে ফ্রান্সের আটটি বেগুন গাছ লাগিয়েছেন। গাছ থেকে বেগুন তুলে ফেললেও কয়েকটি গাছে এখনো বেগুন আছে। ছয়টি বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য রেখে দিয়েছেন। হলুদ রঙের এক একটি বেগুন সাড়ে তিন শ থেকে চার শ গ্রাম ওজনের। দূর থেকে এ বেগুন অনেকটা আপেলের মতো। পাতাগুলো স্বাভাবিক বেগুন গাছের মতো নয়। তবে গাছে ছোট ছোট কাটা আছে। গাছগুলো চার থেকে পাঁচ ফুট লম্বা। কাঁচা অবস্থায় বেগুন হালকা সবুজ। আর পাকলে হলুদ রং ধারণ করে।
চিরঞ্জীব চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাড়ে তিন মাস আগে এক দূরসম্পর্কের আত্মীয় ফ্রান্স থেকে বেগুন বীজগুলো পাঠায়। বীজ লাগালে গাছ উঠবে কি না সন্ধিহান ছিলাম। কিন্তু লাগানোর এক মাসের মধ্যেই দেখি বেগুন গাছ উঠে গেছে। গত মাস থেকে বেগুন গাছে বেগুন ধরছে। প্রত্যেক গাছে গড়ে আট থেকে দশটি বেগুন ধরেছে। একটি বেগুনের ওজন সাড়ে তিন শ থেকে চার শ গ্রাম হবে।’
চিরঞ্জীব আরও বলেন, গাছে পানি দেওয়া ছাড়া আর কোনো পরিচর্যাই করতে হয়নি তাঁকে। আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে কয়েক শতক জমিতে এই জাতের বেগুন চাষ করার ইচ্ছা রয়েছে। তাই ছয়টি বেগুন বীজ সংগ্রহের জন্য রেখে দিয়েছেন তিনি।
চিরঞ্জীব চাকমার স্ত্রী কুন্তিসোনা চাকমা (৪৫) বলেন, নতুন জাতের বেগুন খেতেও অনেক সুস্বাদু। কীটনাশক ছাড়া বিষমুক্ত এই বেগুন শতভাগ নিরাপদ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জানা মতে দেশে আর কোথাও ফ্রান্সের জাতের বেগুন চাষ করা হয়নি। বিষয়টি কৃষির জন্য ইতিবাচক। আমি সরেজমিন দেখে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।’