বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তরঙ্গ নিলামের শেষ দিকে তিন মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন (জিপি), রবি ও টেলিটকের লড়াই জমে উঠেছে। ২২.৪ মেগাহার্জ তরঙ্গ বরাদ্দের পর শেষ ৫ মেগাহার্জ নিয়ে এ লড়াই চলছে। ইতিমধ্যে ১২টি রাউন্ড শেষ হয়েছে। তারপরও দাম হাঁকানো বন্ধ করছে না প্রতিষ্ঠান তিনটি। ফলে ২ কোটি ৭০ লাখ ডলার থেকে দাম ধাপে ধাপে ৩ কোটি ডলারে উঠেছে।
ঢাকার একটি হোটেলে আজ সোমবার বেলা ১১টায় শুরু হওয়া এ নিলামে দেশের চার মোবাইল ফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এতে ডাক ও টেলিযোগাযাগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বিটিআরসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা ও চার অপারেটরের নির্বাহী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নিলামে সভাপতিত্ব করেন বিটিআরসির তরঙ্গ বিভাগের কমিশনার এ কে এম শহীদুজ্জামান। বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম নিলাম পরিচালনা করেন।
সকালে ১৮০০ ব্যান্ডের তরঙ্গ বরাদ্দের মধ্য দিয়ে নিলাম শুরু হয়। এ ব্যান্ডের সক্ষমতা বেশি। একসঙ্গে অনেক গ্রাহককে সেবা দেওয়া যায় ১৮০০ ব্যান্ড দিয়ে। এ ব্যান্ড থেকে বাংলালিংক ৪ দশমিক ৪, রবি ২ দশমিক ৬ ও গ্রামীণফোন দশমিক ৪ মেগাহার্জ তরঙ্গ কেনে। ফলে আগের তরঙ্গসহ ১৮০০ ব্যান্ডে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের তরঙ্গ ২০ মেগাহার্জ করে দাঁড়ায়। টেলিটক ১৮০০ ব্যান্ডের নিলামে অংশ নেয়নি। ফলে এই ব্যান্ডে তাদের তরঙ্গ ১০ মেগাহার্জ রয়ে যায়।
১৮০০ ব্যান্ডে প্রতি মেগাহার্জ ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার দরে ৭ দশমিক ৪ মেগাহার্জ বরাদ্দ দিয়ে সরকারের আয় হয়েছে ১ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা (৮৫ টাকা ডলার ধরে)। এ টাকা কিস্তিতে পরিশোধ করবে অপারেটরগুলো। তবে ২৫ শতাংশ টাকা দিয়ে তাদের তরঙ্গ বরাদ্দ নিতে হবে।
২১০০ ব্যান্ডের তরঙ্গ দিয়ে একসঙ্গে বেশি এলাকায় সেবা দেওয়া যায়। এ ব্যান্ড থেকে নিলামের শুরুতে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংক ৫ মেগাহার্জ করে তরঙ্গ নেয়; দাম দাঁড়ায় মেগাহার্জ প্রতি ২ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এরপর লড়াই হয় শেষ ৫ মেগাহার্জ নিয়ে। এই অংশে বাংলালিংক অংশ নেয়নি। বেলা পৌনে ৩টা পর্যন্ত গ্রামীণফোন, রবি ও টেলিটক নিলাম দাম বাড়াতে বাড়াতে ২ কোটি ৭০ লাখ ডলার থেকে ৩ কোটি ডলারে উন্নীত করে।
২০১৮ সালে বিটিআরসি সর্বশেষ তরঙ্গ নিলাম করে। তখন নিলাম শেষে গ্রামীণফোনের তরঙ্গের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৩৭ মেগাহার্জ। রবির তরঙ্গ দাঁড়ায় ৩৬ দশমিক ৪ মেগাহার্জ। বাংলালিংকের তরঙ্গ দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৬ মেগাহার্জ। টেলিটকের তরঙ্গ ছিল ২৫ দশমিক ২ মেগাহার্জ। সব মিলিয়ে অপারেটরদের কাছে তরঙ্গ বরাদ্দ রয়েছে ১২৯ দশমিক ২ মেগাহার্জ।