ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খানকে চাকরি থেকে অপসারণের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংবাদপত্রে নিবন্ধ লিখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় মোর্শেদ হাসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
ওই শিক্ষকের করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। একই সঙ্গে তাঁকে আগের অবস্থানে পুর্নবহাল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা–ও রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে জ্যোর্তিময় বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই অভিযোগ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। অথচ ওই অভিযোগ কমিটির তদন্তের এখতিয়ারে নেই। সর্বশেষ গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় অধ্যাপক মোর্শেদকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। অব্যাহতি–সংক্রান্ত চিঠি ওই বছরের ৬ অক্টোবর তিনি হাতে পান। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আচার্যের কাছে গত বছরের ১১ অক্টোবর আপিল করেন তিনি। আপিল দায়েরের সাত মাস পেরোলেও কোনো ফল না পেয়ে অব্যাহতির ওই আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে তিনি রিটটি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ পাচ বিবাদীকে চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’
এর আগে ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে একটি জাতীয় দৈনিকে অধ্যাপক মোর্শেদের লেখা ‘জ্যোতির্ময় জিয়া’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুকে কটূক্তি করা ও ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ তোলে ছাত্রলীগ। পরে অধ্যাপক মোর্শেদ ওই পত্রিকাতেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখাটির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বঙ্গবন্ধু-সংশ্লিষ্ট অংশটুকু প্রত্যাহার করে নেন।
ওই বছরের ২ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মোর্শেদ হাসানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দিয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রতিবেদনের পর প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল করা হয়। ট্রাইব্যুনালের সুপারিশ অনুযায়ী গত বছরের ৯ সেপ্টেম্বর সিন্ডিকেটের সভায় মোর্শেদ হাসানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণের সিদ্ধান্ত হয়।