টাঙ্গাইলের সখীপুরে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর জানাজানি হওয়ার পর ওই স্বাস্থ্যকর্মীর সংস্পর্শে আসা ১০ বাড়িকে লকডাউন ঘোষণা করে উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি ওই স্বাস্থ্যকর্মীর পরিবারের তিনজনসহ সরাসরি সংস্পর্শে আসা ১০ জনের করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
আজ সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর গ্রামে গিয়ে লকডাউন ঘোষণা করেন। ওই সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসা দল নমুনা সংগ্রহ করেন। এসব নমুনা মঙ্গলবার সকালে ঢাকায় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলায়। তিনি রাজধানী ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলোজি হাসপাতালের একজন ওয়ার্ডবয়।
হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, কয়েক দিন আগে এ হাসপাতালের দুজন রোগীর শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। ওই দুটি ওয়ার্ডের সব চিকিৎসক ও রোগীর সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের গত বুধবার নমুনা সংগ্রহ করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠানো হয়। গত শনিবার ফলাফলে শুধু ওই স্বাস্থ্যকর্মীর করোনাভাইরাস ‘পজিটিভ’ পাওয়া যায়। পরে ওই দিনই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই ব্যক্তিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। পরে তারা জানতে পারে, উপসর্গ নিয়েই ওই স্বাস্থ্যকর্মী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন। হাসপাতালের ফোন পেয়ে সোমবার ওই স্বাস্থ্যকর্মী তাঁর কর্মস্থল ঢাকায় ফিরে আসেন।
করোনায় আক্রান্ত ওই স্বাস্থ্যকর্মী সোমবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক আমাকে ঢাকার মোহাম্মপুরের বাসায় কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য পরামর্শ দেন। আমার শরীরে এখনো কোনো উপসর্গ দেখা দেয়নি। করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে আমাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান জানান, ওই স্বাস্থ্যকর্মীর সংস্পর্শে আসা তাঁর স্ত্রী, দুই সন্তান, তাঁকে বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক, চালকের স্ত্রীসহ চারজন, ওই অটোরিকশার আরও দুই যাত্রী, স্বাস্থ্যকর্মী যে দোকান থেকে জিনিসপত্র কিনেছিলেন সেই দোকানদারসহ ১০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান সখীপুরে এ পর্যন্ত ৭০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত ৪৭ জনের নমুনার ফলাফল এসেছে। এর মধ্যে কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হননি। তবে ওই স্বাস্থ্যকর্মীর কারণে সখীপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসমাউল হুসনা বলেন, আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সংস্পর্শে আসা ১০ বাড়ি লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।