ডে–কেয়ার থেকে শিশু হারালে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র থেকে কোনো শিশু হারিয়ে গেলে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড, পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করা যাবে। এ বিধান রেখে ‘শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইন-২০২১’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

প্রস্তাবিত আইনানুযায়ী শিশুর জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হলে, কর্তব্যে অবহেলা ও শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হলেও সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত জেল-জরিমানা ভোগ করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আজ সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চ্যুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে অনলাইনে যুক্ত হন। আর মন্ত্রীরা সচিবালয় থেকে যুক্ত হন। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এ ছাড়া সামরিক শাসনের সময়ে করা ৫৯টি অধ্যাদেশ আগামী জুন মাসের মধ্যে আইনে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কেউ শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র পরিচালনা করতে পারবেন না। শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র আইনটি হলে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নিজ ব্যবস্থাপনায় নির্ধারিত শ্রেণির কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করা যাবে। এর পাশাপাশি কোনো ব্যক্তিও এ আইনের অধীন নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনা করতে পারবেন। যেসব শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র এখন পরিচালিত হচ্ছে, নতুন আইন পাস হওয়ার ছয় মাসের মধ্যে সেগুলোকে নিবন্ধন নিতে হবে। বিধিতে এগুলো পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হবে।
শিশুর প্রয়োজনীয় সেবা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বিনোদন, চিকিৎসা, শিক্ষা, অনুকূল পরিবেশ ও প্রয়োজনীয় সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্রগুলোকে। এ ছাড়া প্রতি তিন মাসে একবার সেবাগ্রহণকারী অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে হবে।

বর্তমানে সরকারি পর্যায়ে মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের অধীন ১১৯টি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র রয়েছে। এর বাইরে বেসরকারি পর্যায়েও রয়েছে এ ধরনের কেন্দ্র।

৫৯টি অধ্যাদেশ জুনের মধ্যে আইন হবে

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আদালতের রায় অনুযায়ী, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এবং ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত সাময়িক শাসনের সময়ে করা অধ্যাদেশগুলোর মধ্যে যেগুলো প্রয়োজন, সেগুলো আইন করতে হবে। বাকিগুলো বাদ দিতে হবে। ওই সময়ে কয়েক শ অধ্যাদেশ ছিল। বেশির ভাগই আইন হয়ে গেছে। ৫৯টি বাকি আছে। এসব অধ্যাদেশ প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, এসব অধ্যাদেশ আগামী জুনের মধ্যে আইনে পরিণত করতে হবে। এ বিষয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি সচিবদের সঙ্গে বসে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হবে।

এ ছাড়া বৈঠকে ‘ব্যাংকার বহি সাক্ষ্য আইন, ২০২১’–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রস্তাবিত এ আইনে ডিজিটাল রেকর্ডকেও সাক্ষ্য আইনে বিবেচনায় নেওয়া হবে। এটি কেবল ব্যাংকিংয়ের জন্য।

শকুন রক্ষায় কিটোপ্রোফেন ওষুধ বন্ধ

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মহাবিপন্ন শকুন রক্ষার্থে ক্ষতিকর ভেটেরিনারি ওষুধ কিটোপ্রোফেন উৎপাদন বন্ধের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর পরিবর্তে আরেকটি ওষুধ ব্যবহার করা হবে। দেশে ১৯৭০ সালের দিকে ৫০ হাজারের মতো শকুন ছিল। এখন আছে মাত্র ২৬০টি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় শকুন কাজ করে।
এ ছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ ও মরক্কোর মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকিরোধসংক্রান্ত চুক্তির খসড়া অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।