প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ বলেছেন, সম্প্রতি পাস হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। তথ্য অধিকার আইনে অবাধ তথ্য পাওয়ার অধিকার আছে। অন্য কোনো আইনের মাধ্যমে এই আইনের বিধান ক্ষুণ্ন হবে না বলে দাবি তাঁর।
আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তথ্য কমিশন। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধান তথ্য কমিশনার।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, দেশে ১১২০টি নিবন্ধিত সংবাদপত্র আছে। ৩০টি টেলিভিশন চ্যানেল আছে। অসংখ্য অনলাইন পত্রিকা আছে। এসব প্রমাণ করে, সরকার মানুষের বাক্স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পড়েন প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত তথ্য কমিশনে দুই হাজার ১৮৭টি অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে দুই হাজার ১০০টি অভিযোগ নিষ্পত্তি হয়েছে। নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে ৮৭টি। তিনি বলেন, তথ্যের বিশাল চাহিদার তুলনায় তথ্য প্রাপ্তির আবেদন অনেক কম। নিরক্ষরতা, দারিদ্র্য, অজ্ঞতা, অসচেতনতা, প্রশাসনিক পদ্ধতি সম্পর্কে অনভিজ্ঞতা এর মূল কারণ।’
মরতুজা আহমদ বলেন, ‘দেশের প্রায় সব আইন প্রয়োগ করে সরকার বা রাষ্ট্রযন্ত্র। কিন্তু তথ্য অধিকার আইনটি প্রয়োগ করে জনগণ’।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল। এ পর্বে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি না—সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে প্রধান তথ্য কমিশনার বলেন, ‘আমার দৃষ্টিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি তথ্য অধিকার আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।’ কারণ হিসেবে তিনি তথ্য অধিকার আইনের ৩ ধারার উল্লেখ করেন। যেখানে বলা আছে, প্রচলিত অন্য কোনো আইনের মাধ্যমে এই আইনের বিধানাবলি ক্ষুণ্ন হবে না। আর তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সংক্রান্ত বিধানাবলি এই আইনের (তথ্য অধিকার আইন) বিধানাবলির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হলে, এই আইনের বিধানাবলি প্রাধান্য পাবে ৷
গণমাধ্যম এবং সুশীল সমাজের আপত্তির মুখে ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হয়। দলমত-নির্বিশেষে অনেকেই এই আইন নিয়ে তাঁদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেকের আশঙ্কা, মানুষকে ভয়ভীতি দেখাতে এই আইনের ব্যাপক অপপ্রয়োগ হতে পারে।