জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে পুলিশের বরখাস্ত উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে একটি দল।
দুদক ও কারাসূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, আজ দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে গত ২ জুলাই থেকে কারাগারে আছেন ডিআইজি মিজান।
গত ২৪ জুন ৩ কোটি ৭ লাখ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় মিজানুর রহমান, তাঁর স্ত্রী সোহেলিয়া আনার রত্না, ছোট ভাই মাহবুবুর রহমান ও ভাগনে মাহমুদুল হাসানকে আসামি করা হয়।
এর পর গত ১৬ জুলাই ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ এনে দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ও ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে দুদক। সে মামলায়ও মিজানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
ওই মামলার এজাহারে বলা হয়, খন্দকার এনামুল বাছির কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। অভিযোগ আছে, ডিআইজি মিজানুর রহমানকে অবৈধ সুযোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর (মিজান) অবৈধভাবে অর্জিত ৪০ লাখ টাকা ঘুষ হিসেবে নিয়েছেন বাছির। ঘুষের ওই টাকার অবস্থান গোপন করেছেন। একইভাবে ডিআইজি মিজানুর রহমান সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার আশায় অর্থাৎ অনুসন্ধানের ফলাফল নিজের পক্ষে নেওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে খন্দকার এনামুল বাছিরকে অবৈধভাবে প্রভাবিত করেছেন।
মিজানুর ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ে গোপন করতে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্বিতীয় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করানোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। এ ছাড়া এক সংবাদ পাঠিকাকে প্রাণনাশের হুমকি ও উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে মিজানুরের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করা হয়। নারী নির্যাতনের অভিযোগে গত বছরের জানুয়ারির শুরুর দিকে তাঁকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়। গত ২৫ জুন তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।