কপালে টিপ পরায় হেনস্তার অভিযোগে পুলিশ সদস্য নাজমুল তারেককে সাময়িক বহিষ্কার করায় কিছুটা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী লতা সমাদ্দার। তিনি গণমাধ্যম, পুলিশ প্রশাসন এবং প্রতিবাদে একাত্মতা প্রকাশ করা সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
টিপ পরায় গত শনিবার ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় হয়রানির শিকার হন তেজগাঁও কলেজের থিয়েটার অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক লতা সমাদ্দার। এ বিষয়ে ওই দিনই শেরেবাংলা নগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। এর ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে কনস্টেবল নাজমুলকে শনাক্ত করে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ। নাজমুল তারেক ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রোটেকশন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পরে সোমবার তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পাশাপাশি হেনস্তার ঘটনাটি তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এরপর রাতে মুঠোফোনে লতা সমাদ্দারের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয়। তিনি বলেন, ‘শনাক্তকারী পুলিশ সদস্য বিষয়টি স্বীকার করেছেন বলে শুনেছি। এটাও শুনেছি যে তিনি নাকি টিপ নিয়ে কিছু বলেননি। তবে ঘটনার শুরু থেকেই আমি রাখঢাক করে কিছু বলিনি, যা ঘটেছে তা সবার সামনেই বলেছি। এখন ওই পুলিশ সদস্য যদি বলেন তিনি টিপ নিয়ে কিছু বলেননি, তাহলে আমি পুলিশ প্রশাসনকে বলব, আরও তদন্ত করে দেখতে। তদন্ত হলেই আসল ঘটনা বের হয়ে আসবে।’
লতা সমাদ্দার বলেন, ‘ঘটনার পর আমি লিখিতভাবে থানায় অভিযোগ করেছিলাম। তারপর মিডিয়া বিষয়টি প্রচার ও প্রকাশ করে। তাই মিডিয়াকে আমার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনকেও ধন্যবাদ। অভিযোগের পর দ্রুত সময়ে অভিযুক্তকে শনাক্ত করে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে।’
লতা সমাদ্দার থানায় অভিযোগ করার পর তা গণমাধ্যমে প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নারীরা টিপ পরা ছবি দিয়ে ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এ প্রতিবাদে পুরুষদের অনেকেই কপালে টিপ পরে প্রতিবাদ করেন। বিষয়টি নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফা। সোমবার রাতে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিও নিজে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে টিক পরা ছবি পোস্ট করে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিভিন্ন নারী, সামাজিক সংগঠন ঘটনার প্রতিবাদে বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি মানববন্ধনসহ বিভিন্ন আয়োজন করে।