টিআরপি নির্ধারণ এবং বিদেশি চ্যানেলের ক্লিনফিড পেতে কারিগরি সহায়তায় বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল) প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের (বিএসসিএল) কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময়ে বিএসসিএলের চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ, পরিচালক অধ্যাপক সাজ্জাদ হোসেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মিজান-উল-আলমসহ সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দেশে একটি বা দুটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যারা টিআরপি নির্ধারণ করে, তাদের প্রক্রিয়ায় অনেক নমুনা সংগ্রহের কথা বলা হলেও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি জানিয়েছে যে তারা মাত্র ১৬৪টি নমুনা সংগ্রহ করে সেখান থেকে টিআরপি দেয়, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
বাংলাদেশের জনসংখ্যার নিরিখে কমপক্ষে ১০ হাজার নমুনা নিয়ে কাজ করলেই প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে, অন্যথায় পাওয়া যাবে না উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘ভারতে ৭০ থেকে ৮০ হাজার নমুনা “কন্টিনিউয়াসলি কালেকশন” করা হয় এবং সেভাবেই টিআরপি দেওয়া হয়। সেখানে সরকারের আওতাভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কয়েকটি সংযুক্ত সংস্থার মাধ্যমে টিআরপি নির্ধারণ করা হয়।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে এখন যে অবৈজ্ঞানিক ও ভৌতিক পদ্ধতিতে টিআরপি দেওয়া হচ্ছে, সেখানে আমরা স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করছি। সে জন্য ইতিমধ্যেই একটা কমিটি হয়েছে, কমিটি বেশ কয়েকটা বৈঠক করেছে। আমরা শিগগিরই সমাধানে পৌঁছাব এবং বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোম্পানি এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছে। কীভাবে ১০ হাজার স্যাম্পল কন্টিনিউয়াসলি কালেকশন করা যায়, সেই কারিগরি সহায়তা দিতে তাদের প্রস্তুতি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের খবর। সুতরাং এ ব্যাপারে আমরা শিগগিরই একটা সমাধানে আমরা পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন যে আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী বিদেশি চ্যানেলগুলো কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারে না। বিদেশি চ্যানেলের মাধ্যমে বাংলাদেশি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন আমরা বন্ধ করেছি। কিন্তু বিদেশের পণ্যের বিজ্ঞাপন এখনো প্রদর্শিত হচ্ছে। আইন কিন্তু সেটাকেও অনুমোদন করে না। এটা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কাজ চলছে। আজকে বিএসসিএল জানালো, তারা প্রয়োজনে ক্লিনফিড তৈরি করে দিতে পারবে, যদিও এ দায়িত্ব যারা লাইসেন্স নিয়েছে তাদেরই।
বাংলাদেশে প্রদর্শনের জন্য যারা লাইসেন্স নিয়েছে, সেই সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের দায়িত্ব হচ্ছে এ দেশের আইন অনুসরণ করে ক্লিনফিড পাঠানো বা ক্লিনফিড সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা।’
‘বিদেশি চ্যানেলগুলোতে আইন অনুযায়ী ক্লিনফিড চললে আমাদের টেলিভিশন শিল্পই শুধু উপকৃত হবে তা নয়, পত্রপত্রিকা থেকে শুরু করে আমাদের পুরো গণমাধ্যমের সবাই উপকৃত হবে।’ যোগ করেন মন্ত্রী।
টেলিভিশনের সাংবাদিকদের বেতন–ভাতা সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে টেলিভিশনগুলো আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছে। তাই আমি অনুরোধ জানাব, সবাই যেন বেতন–ভাতা সঠিকভাবে পরিশোধ করেন। আর আমরা আশা করছি, শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মী আইন পার্লামেন্টে নিয়ে যেতে পারব। এটি যখন আইনে রূপান্তরিত হবে, তখন সবার আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।’