রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) ডরমিটরিতে এক নার্সের স্বামীর জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টে মৃত্যুর পর আজ বৃহস্পতিবার ওই ডরমিটরির ৩৫ চিকিৎসক ও নার্স পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে (সঙ্গনিরোধ) থাকার নির্দেশ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বুধবার রাতে ওই ব্যক্তি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সন্দেহে ডরমিটরির বাসিন্দাদের মধ্যে আজ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
পঙ্গু হাসপাতালের পরিচালক মো. আবদুল গণি মোল্ল্যাহ আজ প্রথম আলোকে বলেন, মৃত ব্যক্তির করোনাভাইরাসে আক্রান্তের লক্ষণ ছিল। মৃতদেহের মুখ ও গলার সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ফল পাওয়া গেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে পুরো ভবনের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশকে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, পঙ্গু হাসপাতালের পুরোনো ভবনের পশ্চিম পাশে চিকিৎসক ও নার্সদের থাকার তিনতলা ডরমিটরি ভবন। এখানে চিকিৎসক ও নার্স মিলে ৩৫ পরিবার থাকে। ডরমিটরির নিচতলায় ঢাকা শিশু হাসপাতালের চিকিৎসকেরা থাকেন। ভবনটির দোতলায় ও তিনতলায় থাকেন পঙ্গু হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্স।
মৃত ব্যক্তির প্রতিবেশী এক নার্স জানান, তিন মাস আগে ওই ব্যক্তির স্ত্রী মারা যান। এই দম্পতি নিঃসন্তান ছিলেন। চার-পাঁচ দিন ধরে ব্যক্তিটি জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন। গত বৃহস্পতিবার ডরমিটরির ওয়াশরুমে গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত ব্যক্তিটি পড়ে অচেতন হয়ে যান। সেখান থেকে উদ্ধার করে প্রথমে তাঁকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পুরো ডরমিটরিতে এখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ও সহযোগী অধ্যাপক কে এম মামুন মোর্শেদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, রোগীর জ্বর ও কাশির পাশাপাশি শ্বাসকষ্ট ছিল। বুধবার রাত ১২টার দিকে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ওই ব্যক্তি মারা যান। পরে ঢাকার সিভিল সার্জন আল মারকাজুল ইসলামের মাধ্যমে ধর্মীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করেন।
যোগাযোগ করা হলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুনশি আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, মৃত্যুর খবর শুনেছেন। তবে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নির্দেশ পেলে ডরমিটরি ভবন লকডাউন করে দিতে পুলিশ প্রস্তুত আছে।