প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ ও খালেদা জিয়া বাংলাদেশের উন্নয়নের ব্যাপারে আন্তরিক ছিলেন না। কারণ, তাঁদের কারও জন্মই এ দেশের মাটিতে হয়নি।
ইতালি সফররত প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের ইতালি শাখা আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। আজ বুধবার রোমের পার্কো দে প্রিন্সিপি গ্র্যান্ড হোটেলে এ অনুষ্ঠান হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘একমাত্র আমার বাবা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) এবং আমি এ মাটির সন্তান। আমরা ছাড়া এখন পর্যন্ত যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা বাংলাদেশের বাইরে থেকে এসেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বিহারে, এরশাদ কোচবিহারে ও খালেদা জিয়া শিলিগুড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। আপনারা যদি খেয়াল করে দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন, আমি এবং বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কেউই বাংলাদেশের মাটির সন্তান নয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি, বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে এ মাটির প্রতি আমার কিছু কর্তব্যবোধ রয়েছে। দেশের উন্নয়নের জন্য দেশকে ভালোভাবে জানা অপরিহার্য। সঠিক পরিকল্পনা ও সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা একটি দেশকে অবশ্যই বদলে দিতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘অনেকেই ক্ষমতায় এসেছেন। তবে তাঁরা দেশকে ভালোভাবে জানতেন না, কেননা তাঁদের এ মাটিতে জন্মই হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক এবং তিনি দেশের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে যাঁরা ক্ষমতায় এসেছেন, তাঁরা দেশের উন্নয়নের কথা কখনোই ভাবেননি। ক্ষমতাকে আমরা জনগণের জন্য কাজ করার সুযোগ বলে মনে করি। এটি জনগণের সেবা করার সুযোগ। আর আমি জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। আর এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ শুধু দেশের উন্নয়ন চায়। আমাদের আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। আমরা সামনে এগিয়ে যাব।’
বাংলাদেশের সব উন্নয়ন প্রকল্পের ৯০ শতাংশ এখন নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়ন হয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে বাংলাদেশকে ভিক্ষা দেওয়ার কথা বলি না। তারা এখন (উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সহযোগিতা করতে) আমাদের কাছে আসে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংশ্লিষ্ট দেশের নিয়ম-নীতি মেনে চলার আহ্বান জানান, যাতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দেশের প্রতিটি উপজেলা থেকে কমপক্ষে এক হাজারজনকে বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে। সরকার ডিজিটাল পাসপোর্টের পর আধুনিক ই-পাসপোর্ট চালু করেছে।
বাংলাদেশের বিমানবন্দরে অনেক সময় প্রবাসীদের হয়রানির শিকার হওয়ার বিষয়টি বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে আমাদের দেশের কিছু মানুষের চরিত্রই খারাপ। যেই শোনে বাইরে থেকে আসবে, তখনই ভাবে যে একটু চাপ দিলেই মনে হয় কয়েকটা ডলার পাওয়া যাবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঘুষ যে দেয়, সেও যেমন অপরাধী, যে নেয় সেও অপরাধী। উভয়ই সমান অপরাধী। দিয়ে দিয়েই আপনারা এ অভ্যাসটা খারাপ করেছেন। ভবিষ্যতে এ কাজটা আর করবেন না।’
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইদ্রিস ফরাজী এবং ইতালিপ্রবাসী হোসনে আরা বেগম।