দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় বিনা দোষে কারাভোগ করা পাটকলশ্রমিক জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণের ওপর অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট। সংস্কৃতিসচিব ও তথ্যসচিবের প্রতি ওই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার দুদক ওই নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। আবেদনটি আজ শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম জাহিদ সারোয়ার।
পরে খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, জাহালমের কারাভোগ নিয়ে এর আগে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুল দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে দুদক আবেদনটি করে। হাইকোর্ট ওই স্বতঃপ্রণোদিত রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্টদের এসব নির্মাণ থেকে বিরত রাখতে সংস্কৃতিসচিব ও তথ্যসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘জাহালমকে নিয়ে সিনেমা, তিনিই জানেন না!’ শিরোনামে ১৩ মার্চ প্রথম আলোয় এবং একই দিন ‘জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র, অভিনয় করবেন রিজু’ শিরোনামে মানবজমিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
গত সোমবার এ বিষয়ে খুরশীদ আলম খান বলেন, প্রথম আলো ও মানবজমিন অনলাইনে জাহালমের জীবনের গল্প নিয়ে সিনেমা বানানো হবে বলে খবর প্রকাশিত হয়। বিষয়টি কমিশনের নজরে আসে। কমিশন ১৪ মার্চ সিদ্ধান্ত নেয়, ওই সিনেমা নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হবে। সে অনুসারে প্রতিবেদন দুটি যুক্ত করে নিষেধাজ্ঞার আবেদন প্রস্তুত করা হয়।
গতকাল দুদক আদালতের অনুমতি নিয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জাহালমকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনালী ব্যাংকের সাড়ে ১৮ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতি মামলার আসামি আবু সালেক নামের এক ব্যক্তি। কিন্তু জাহালমকে আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত করে ২৬টি মামলায় আসামি করা হয়। প্রায় তিন বছর কারাভোগ করে হাইকোর্টের নির্দেশে গত ৩ ফেব্রুয়ারি তিনি মুক্তি পান। তাঁর কষ্টের কাহিনি নিয়ে সিনেমা নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মারিয়া তুষার।