জাহাজে গোলার আঘাতের পর ছেলের বার্তা পেয়ে ছুটে এসেছেন বাবা

ইউক্রেনে জাহাজে থাকা নাবিকদের স্বজনেরা শিপিং করপোরেশনের কার্যালয়ে ছুটে এসেছেন
ছবি: প্রথম আলো

ইউক্রেনে বাংলাদেশি জাহাজে গোলা হামলায় এক নাবিক নিহত হওয়ার পর ওই জাহাজে থাকা নাবিকদের স্বজনেরা আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) কার্যালয়ে ছুটে এসেছেন। তাঁদের মধ্যে একজন মো. ওবায়দুল হক। তাঁর ছেলে মাসুম বিল্লাহ ইউক্রেনের ওই জাহাজে আটকা।

বাবা ওবায়দুল হক বলেন, ‘গোলার আঘাতের পর ছেলে বার্তা পাঠিয়েছে। খুব আতঙ্কে আছে তারা সবাই। সরকারের কাছে আবেদন জানাই, আমাদের সন্তানদের ফিরিয়ে আনুন।’

ফেনীর সোনাগাজী এলাকার ওবায়দুল হক থাকেন চট্টগ্রামের কাটগড় এলাকায়। তাঁর ছেলের এটি দ্বিতীয় ভয়েজ ছিল।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দর জলসীমায় নোঙর করে। পরদিন রাশিয়ার হামলা শুরু হলে জাহাজটি আটকা পড়ে। গতকাল বুধবার জাহাজটিতে গোলার আঘাতে হাদিসুর রহমান নামের এক নাবিক নিহত হন।

জাহাজের ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমানের ভায়রা আবদুল্লাহ আল মামুনও নাবিকদের উদ্ধারে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে এসেছেন বিএসসি কার্যালয়ে। তিনি প্রথম আলোকে জানান, বাড়িতে মাসুদুর রহমানের বৃদ্ধ মা–বাবা, স্ত্রী ও দুই সন্তান খুব দুশ্চিন্তায় আছেন। তাঁদের বাড়ি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলায়।

গোলা হামলার পরে জাহাজে থাকা ছেলের বার্তা পেয়ে ছুটে এসেছেন বাবা ওবায়দুল হক

জাহাজে কর্মরত নাবিক মো. হানিফের খোঁজে ছুটে এসেছেন তাঁর সন্তান মো. কায়সার হামিদ। তিনি বলেন, ‘হামলার আগে বাবার সঙ্গে মেসেঞ্জারে বার্তা দিয়ে কথা হয়েছে। ভালো আছে জানিয়েছিল। হামলার পরে আর যোগাযোগ করতে পারিনি। আমার বাবাসহ সব নাবিকদের উদ্ধার করুন।’

জাহাজে প্রথমবার চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন ফেনীর সাজ্জাদ ইবনে আলম। তাঁর ভাই নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভাই প্রথমবার এমন বিপদের মধ্যে পড়েছে। সরকারের কাছে আবেদন জানাই, দ্রুত উদ্ধার করুন নাবিকদের।’

বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সরকারি সংস্থা। এই সংস্থার সাধারণ পণ্যবাহী জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে পৌঁছানোর পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে সেখানে রয়েছে। জাহাজে বাংলাদেশের ২৯ জন নাবিক ছিলেন। ওই দিন ভোরেই রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। এখন জাহাজটিতে ২৮ জন নাবিক আটকে আছেন।