প্রত্নতত্ত্ববিদ, লেখক এনামুল হক আজ রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর সহকর্মী ও চিত্রশিল্পী এস এম সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাইফুল ইসলাম বলেছেন, এনামুল হক সুস্থ ছিলেন। কোরবানির মাংস বণ্টনের জন্য বাড়িতে তদারকির কাজও করেছেন। দুপুরে খেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। এরপর বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক আমিনুর তাঁকে ডাকতে গিয়ে সাড়া পাননি। পরে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এনামুল হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাস বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভের পর যুক্ত হন প্রত্নতত্ত্ব গবেষণার কাজে।
কর্মজীবনে এনামুল হক ১৯৬২ সালে ঢাকা জাদুঘরে যোগদান করেন। ১৯৮৩-৯১ মেয়াদে জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে তিনি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নিযুক্ত হন। বঙ্গীয় শিল্পকলা চর্চার আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বার্ষিক জার্নাল অব বেঙ্গল আর্টের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এনামুল হক জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠা ও আহসান মঞ্জিলকে জাদুঘরে রূপান্তরের ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা মহাপরিচালক ছিলেন।
শিক্ষা, সংস্কৃতি ও গবেষণায় অবদানের জন্য ২০১৪ সালে একুশে পদক, ২০১৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ২০১৮ সালে তিনি ভারতের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক সম্মাননা ‘পদ্মশ্রী’তে ভূষিত হন। এ ছাড়া ২০১২ সালে ভারতের চেন্নাইয়ের ‘রিচ ফাউন্ডেশন অ্যাওয়ার্ড’সহ দেশে-বিদেশে অনেক সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।
মঙ্গলবার এনামুল হকের মেয়ে তৃণা হক যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরলে তাঁর দাফন সম্পর্কে জানানো হবে। তাঁর লাশ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে।