সিলেটের ‘সুন্দরবন’ নামে পরিচিত রাতারগুলের জলার বন যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবিতে জেলা প্রশাসন ও বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন রাতারগুল গ্রামবাসী। গতকাল রোববার পৃথকভাবে স্মারকলিপি দিয়ে সিলেট বন বিভাগের প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুমোদনের আগে সার্বিক অবস্থা পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রাতারগুল বাংলাদেশের একমাত্র জলার বন হওয়ায় ১৯৭৩ সালে সংরক্ষিত ঘোষণা করে বন বিভাগ। নদী ও হাওরবেষ্টিত ৫০৪ দশমিক ৫০ একর আয়তনের রাতারগুলকে নিয়ে সিলেট বন বিভাগ একটি প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। এতে রাতারগুলের উন্নয়ন ও বন্য প্রাণীর অভয়ারণ্যে রূপান্তর করতে পাঁচ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়। এ নিয়ে গত ২৩ আগস্ট প্রথম আলোয় ‘বদলে যেতে পারে বনের প্রকৃতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এর সূত্র ধরে গতকাল গ্রামবাসী ওই স্মারকলিপি দেয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় বন বিভাগের সঙ্গে গ্রামবাসীর ১০ বছর মেয়াদি একটি চুক্তি রয়েছে। এ চুক্তি অনুসারে রাতারগুলে মূর্তা বাগান সৃজন করায় ৪৫ শতাংশ অংশীদার রয়েছে গ্রামবাসী। এ অবস্থায় বন বিভাগের বন্য প্রাণী অভয়রাণ্যে রূপান্তর তথা উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন উদ্যোগে চুক্তির বিষয়টি অমীমাংসিত থাকবে। এ থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটতে পারে বলে গ্রামবাসীর আশঙ্কা। গ্রামবাসী রাতারগুলের উন্নয়নে ভবিষ্যৎ ও বাস্তবতা যাচাই-বাছাইয়ে বন ও পরিবেশ গবেষকদের পর্যবেক্ষণ এবং স্থানীয় লোকজনের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানান।
রাতারগুল গ্রামবাসীর পক্ষে মো. হানিফ মিয়া, জুবায়ের আহমদ, মোখলেছুর রহমান, ইব্রাহিম আলী ও আবদুল কাদির স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। স্মারকলিপি প্রদান করে তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, স্থানীয় হিসেবে তাঁদের মতামত প্রাধান্য দেওয়ার কথা। বন বিভাগ নতুন প্রকল্প গ্রহণের আগে এ ধরনের কোনো মতামত নেয়নি। এখনো তাঁদের মতামত না নেওয়া হলে ভবিষ্যতে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করে রাতারগুলের বন যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণে তাঁরা উদ্যোগী হবেন।
স্মারকলিপিতে মূর্তা বাগান সৃজনে বন বিভাগের সঙ্গে গ্রামবাসীর অংশীদারির চুক্তিপত্রের অনুলিপি, মূর্তা বাগানের প্রকল্প এলাকার নকশার অনুলিপি সংযুক্ত করে দেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম ও সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার মিয়া ওই স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।