সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) গত দুই দিনে রোগ শনাক্তকরণের কোনো নমুনা সংগ্রহ করেনি। প্রতিষ্ঠানটি তাদের কাছে জমা থাকা নমুনা পরীক্ষা করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
করোনা শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু করেছিল আইইডিসিআর। অতি সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আইইডিসিআর আগের মতো নমুনা সংগ্রহ করবে না। রোগ শনাক্তের পরীক্ষাও করবে কম। বাস্তব প্রয়োজনে এটা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এখন ৩০টির বেশি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। এসব ল্যাবের মান যাচাই করবে আইইডিসিআর। কোভিড–১৯ বিষয়ক বিশ্লেষণ ও গবেষণার কাজটিও তাদের। তারা কোভিড–১৯ চিকিৎসায় চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণও দেবে। মান যাচাইয়ের জন্য অন্য ল্যাবের নমুনা পরীক্ষা ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদপ্তের পাঠানো নমুনা তারা রোগ শনাক্তের জন্য পরীক্ষা করবে। আলোচনা করে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আইইডিসিআরের দেওয়া নম্বরে ফোন করলে স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করতেন। এরপর পরীক্ষা শেষে আইইডিসিআর ফলাফল জানাত। বেশ কিছু দিন ধরে অভিযোগ শোনা যাচ্ছে, ফোন করার পর বেশ কিছু দিন পার হলেও কেউ নমুনা সংগ্রহ করতে যান না। নমুনা সংগ্রহ হলেও পরীক্ষার ফল জানাতে দেরি হচ্ছে। অনেক নমুনা জমে আছে প্রতিষ্ঠানে। এর পরিমাণ প্রায় দুই হাজার।
গতকাল সোমবার আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা বলেছেন, গত পরশু তাঁরা এক হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করেছেন। অন্য একটি সূত্র বলছে, এর প্রায় অর্ধেক নমুনা ছিল হাসপাতালে ভর্তি বা বাড়িতে চিকিৎসাধীন থাকা রোগীদের। রোগী ভাইরাসমুক্ত হয়েছেন কি না, তা জানার জন্য এই পরীক্ষার দরকার হয়।
আইইডিসিআরের স্বাস্থ্যকর্মীদের কয়েকটি দল রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকার মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিদিন নমুনা সংগ্রহ করতেন। গত দুই দিন তাঁরা নমুনা সংগ্রহে যাননি। নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার বিষয়টি এখন তত্ত্বাবধান করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণকক্ষ। নিয়ন্ত্রণকক্ষের একজন কর্মকর্তা গতকাল প্রথম আলোকে বলেছেন, গত দুই দিনে আইইডিসিআর নতুন কোনো নমুনা সংগ্রহ করেনি। এখন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নমুনা পাঠালেই তারা রোগ শনাক্তকরণ পরীক্ষা করবে। এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহ আর হবে না। নমুনা সংগ্রহের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণকক্ষ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বুথ তৈরির কাজ করছে। সেখানে মানুষ এসে নমুনা দেবে।