জেআরসির ভার্চুয়াল বৈঠক

ছয় নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা জানুয়ারিতে

বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা
বাংলাদেশ ও ভারতের পতাকা

বাংলাদেশ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল শীর্ষ সম্মেলনের ধারাবাহিকতায় এবার দুই দেশের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) সদস্যরা ছয়টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের বিষয়ে আলোচনায় বসছেন। তিন বছরের বিরতি শেষে জেআরসির বৈঠক আগামী ৫ ও ৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বৈঠকটি ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে। এতে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তির বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এবং অন্য ছয়টি অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ঢাকায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এবং দিল্লির কূটনৈতিক সূত্র আজ রোববার প্রথম আলোকে জেআরসির বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার ভার্চ্যুয়াল আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই পক্ষের ২০১১ সালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জরুরি ভিত্তিতে তিস্তা চুক্তি সইয়ের ওপর জোর দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের আন্তরিক প্রতিশ্রুতি এবং তাঁর সরকারের অব্যাহত প্রচেষ্টার কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। দুই শীর্ষ নেতা মনু, মুহুরী, খোয়াই, ধরলা, দুধকুমার ও গোমতী—এ ছয় অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনের বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির কাঠামো দ্রুত শেষ করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। এ ক্ষেত্রে দুই নেতা শিগগিরই যৌথ নদী কমিশনের পরবর্তী বৈঠক আয়োজনে সম্মত হন।

এ বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, গত বছর ঢাকায় পানিসম্পদসচিবদের বৈঠকে দুই দেশের ছয়টি অভিন্ন নদী নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। পরে অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তি সইয়ের লক্ষ্যে এ ছয় নদীর হালনাগাদ তথ্য-উপাত্ত বিনিময়ও হয়। আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জেআরসির বৈঠকে নদীগুলোর পানিবণ্টনের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে।

বাংলাদেশ ও ভারত ১৯৯৭ সাল থেকে অভিন্ন ছয় নদী নিয়ে আলোচনা করে যাচ্ছে এবং নদীতে পানিপ্রবাহের তথ্য-উপাত্ত বিনিময় করছে। গত বছরের আগস্টে দুই দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকের পরও নতুন করে হালনাগাদ তথ্য বিনিময় করা হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই দেশের পক্ষ থেকে এ ছয় নদীর বিষয়ে আলাদা কারিগরি কমিটিও করা হয়েছে। এসব কমিটি অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির প্রক্রিয়া এবং নদীর প্রবাহের জন্য নির্দিষ্ট অনুপাতে পানি রেখে বাকিটা কী হারে ভাগাভাগি হতে পারে, সে বিষয়ে সুপারিশ করবে। বিষয়গুলোতে কারিগরি জটিলতা রয়েছে। ফলে এতে সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ৫ ও ৬ জানুয়ারি দুই দেশের জেআরসির বৈঠকটি হবে দুই ভাগে। একটি অংশে আলোচনা হবে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে। অন্য অংশ, অর্থাৎ কারিগরি কমিটিতে আলোচনা হবে দুই দেশের অভিন্ন নদীর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। ওই আলোচনায় ছয় নদীর প্রসঙ্গটি আসবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশের ১০ জেলার ওপর প্রবহমান অভিন্ন ১৫টি নদী সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে সরকার। জেআরসির সভায় কারিগরি কমিটির আলোচনাকালে কাজগুলো নির্বিঘ্নে করার বিষয়ে ভারতের সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ।