করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সর্বশেষ ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে শেষ হবে। এরপর নতুন করে ছুটি আরও বাড়বে কি না সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দেশের করোনা পরিস্থিতি এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় ঈদের পর ছুটির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশ লকডাউন তুলে দিয়েছে বা শিথিল করছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশও সেই পথে হাঁটবে কি না সেটি নিয়ে সরকারের মধ্যে আলোচনা আছে। সে ক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে এলাকায় বেশি আক্রান্ত কেবল সেই এলাকাটি লকডাউনের (অবরুদ্ধ) মধ্যে রেখে অন্যান্য এলাকায় লকডাউন তুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি পরিস্থিতি সচল রাখা হতে পারে । জীবন ও জীবীকার বিষয়টি মাথা নিয়েই এগোচ্ছে সরকার। সে ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও অবনতি হলে ছুটি কিছু দিন বাড়লেও অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখতে সীমিত পরিসরে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান সচল রাখা হতে পারে।
জানতে চাইলে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, এবার কী হবে সেটি এখনো বলা যাচ্ছে না। ইউরোপ তো ইতিমধ্যে খুলে দিচ্ছে। বাংলাদেশে ছুটির বিষয়ে ২৮ মের দিকে হয়তো সিদ্ধান্ত হবে।
করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। ইতিমধ্যে সাত দফায় ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ঈদুল ফিরতের ছুটিসহ সাপ্তাহিক যুক্ত আছে। এখন ঈদের পর ছুটি আরও বাড়বে কি না সেটি নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ।
ছুটি আরও বাড়ানো হবে কি না সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, এখনো এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।
সর্বশেষ ছুটির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটিকালীন কেউ কর্মস্থল ত্যাগ করতে পারবেন না। এ ছাড়া ছুটির সময় জনসাধারণ ও সব কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিভাগের জারি করা নির্দেশনা (স্বাস্থ্যবিধি) কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। পণ্য পরিবহনের কাজে নিয়োজিত যানবাহন (ট্রাক, লরি, কার্গো ভেসেল ইত্যাদি) ছাড়া অন্যান্য গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও যাত্রীবাহী ট্রেনও বন্ধ থাকবে। এমনকি অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচলও বন্ধ থাকবে। তবে জরুরি সেবা ও গণমাধ্যমসহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান ছুটির বাইরে আছে।
তবে দোকানপাট, তৈরি পোশাক কারখানাসহ কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকও চালু আছে। অফিসও প্রয়োজনে খোলা রাখা যাচ্ছে।
এ অবস্থায় করোনা পরিস্থিতি অবনতি হলে কিছুদিন ছুটি বাড়লেও বেশ কিছু সীমিত আকারে খুলতে পারে। সেক্ষেত্রে কঠোরভাবে মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি। যেমন কর্মকতা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক মাস্ক পরাসহ ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের দেওয়া ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।