১৯৯৬ সালে এশিয়াটিকে যোগ দিই। এরপর ২০০০ সালে মাইন্ডশেয়ারে প্ল্যানিং হেড হিসেবে কাজ শুরু করি। এখন গ্রুপ-এমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি।
প্রতিষ্ঠানের পণ্যের প্রচারের জন্য মিডিয়া স্ট্র্যাটেজি তৈরি ও বাস্তবায়ন করা আমার কাজ। কীভাবে পণ্যের প্রচার করলে সবচেয়ে বেশি ভোক্তার কাছে পৌঁছানো যাবে, এ বিষয় নিয়ে কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমরা প্রথমে আলোচনা করি। বিজ্ঞাপন তৈরি করার পর সেটি কত কম টাকা খরচ করে কত বেশি ভোক্তার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিয়ে ভেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিই।
বহুজাতিক গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ক্যান্টার অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে ন্যাশনাল মিডিয়া সার্ভে (এনএমএস বা জাতীয় প্রচারমাধ্যম জরিপ) করে আসছে। ক্যান্টারের এই জরিপের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই মূলত আমরা মিডিয়া ম্যাপিং করে থাকি।
ক্যান্টারের জরিপে অনেক বছর ধরেই প্রথম আলো প্রথম স্থান ধরে রেখেছে। মিডিয়া নিয়ে যত বেশি গবেষণা হবে, প্রথম আলোর মতো পত্রিকা ততই লাভবান হবে। কারণ, প্রথম আলো জরিপের ফলাফলকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সে অনুযায়ী পাঠকদের জন্য বিষয়বস্তু সাজিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তারা অনেক বেশি এগিয়ে। দেশে প্রথম আলোই একমাত্র পূর্ণাঙ্গ পত্রিকা, যা সব ধরনের পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য ও প্রশংসিত।
বিজ্ঞাপনদাতাদের আমরা বলি, তরুণদের জন্য প্রথম আলোয় ‘স্বপ্ন নিয়ে’ নামে একটি বিভাগ রয়েছে। তরুণদের লক্ষ্য করে কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন করতে চাইলে ‘স্বপ্ন নিয়ে’ই মোক্ষম জায়গা। কারণ, স্বপ্ন নিয়ের ১০০ পাঠকের মধ্যে ৮০ জনই তরুণ। আবার গৃহস্থালি কোনো পণ্যের বিজ্ঞাপন করতে হলে ‘নকশা’য় বিজ্ঞাপন দিলেই সবচেয়ে বেশি কার্যকর হবে।
প্রথম আলো বহুদিন ধরে তাদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। পাঠক ধরে রাখার পরিকল্পনায় প্রথম আলো প্রথম দিন থেকেই অন্য সবার চেয়ে আলাদা। প্রথম আলোয় কোনো সংবাদ প্রকাশিত হলে মানুষ তা শতভাগ বিশ্বাস করে। পাঠকদের মধ্যে প্রথম আলো এ আস্থা তৈরি করতে পেরেছে। এ জন্যই এর পাঠকসংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। পাঠকের চাওয়া অনুযায়ী সত্যনিষ্ঠ লেখা তৈরি করা এবং সেটা তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটি প্রথম আলোই সবচেয়ে ভালোভাবে করতে পেরেছে।
কোভিডের সময় অনেকেই সংবাদপত্র বাসায় নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। তখন ছাপা সংবাদপত্রের বিক্রি কমেছে। তার মানে এই নয় যে মানুষ খবর পড়া বন্ধ করে দিয়েছে। সে সময়ে প্রথম আলোর অনলাইনের পাঠকসংখ্যা অনেক বেড়েছে। প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণ আগে থেকেই ভালোভাবে প্রস্তুত না থাকলে এর পাঠক ধরে রাখতে পারত না।
পাঠকদের কথা মাথায় রেখেই পত্রিকাগুলোর আগামী দিনের পরিকল্পনা করা উচিত। এ ক্ষেত্রে জরিপ সাহায্য করবে সবচেয়ে বেশি। গ্রুপ-এম থেকে আমরা এ ধরনের কাজ করতে সব সময় আগ্রহী। যত বেশি জরিপ হবে, আমাদের কাজ তত সহজ হয়ে আসবে।
এখন করোনা মহামারি চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ছাপা সংবাদপত্রের পাঠক আবার ফিরে আসছে।
মো. মোর্শেদ আলম গ্রুপ-এমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক