ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলায় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে আজ মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ওই শিক্ষকের নাম মফিজ উদ্দিন (৪৫)। তিনি উপজেলার স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন।
পুলিশ, উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় এবং এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সকাল নয়টার দিকে পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী মডেল টেস্ট পরীক্ষায় অংশ নিতে যায়। ওই সময় ছাত্রীকে পরীক্ষার প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা বলে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পেছনে কড়ইগাছের নিচে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ সময় মেয়েটি চিৎকার দিলে অন্য শিক্ষার্থী ও সহকারী শিক্ষকেরা ছুটে আসেন। ওই সময় প্রধান শিক্ষক দ্রুত বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে যান।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেজাউল করিম ঘটনাটি জানতে পেরে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ ফারুককে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি শোনার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে তদন্ত করে বিভাগীয় পদক্ষেপ নিতে বলেছি। পুলিশ প্রশাসনকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ ফারুক গতকাল দুপুরে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন ও গোলাম মোস্তফা খানকে ঘটনার তদন্ত করতে ওই বিদ্যালয়ে পাঠান। তিনি জানান, ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক এবং অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বিভাগীয় পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
গতকাল রাতে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, গতকাল অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মফিজ উদ্দিনকে প্রথমে বাসা থেকে আটক করা হয়। রাতে ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। আজ সকালে শিক্ষককে আদালতের মাধ্যমে ময়মনসিংহ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
ওই ছাত্রীর মা ক্ষোভের সঙ্গে সাংবাদিকদের বলেন, ‘এই ধরনের চরিত্রের মানুষ কখনো শিক্ষক হতে পারে না। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছি। আমি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই, যেন কোনো শিক্ষক আর কোনো শিক্ষার্থীকে নির্যাতন করতে না পারে।’
এদিকে গতকাল বাসা থেকে আটক হওয়ার সময় সাংবাদিকদের মফিজ উদ্দিন তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।