সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের হামলায় ছাত্রদল নেতা তাওহীদুল ইসলাম (২৬) নামে এক মেডিকেল শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি ওসমানী মেডিকেল কলেজে চতুর্থ বর্ষে পড়তেন৷ গতকাল বুধবার সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ হত্যার প্রতিবাদে আজ থেকে কলেজে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে ছাত্রদল৷
গতকাল রাত নয়টায় যোগাযোগ করা হলে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাওহীদুল ইসলাম নগরের স্টেডিয়াম এলাকাসংলগ্ন মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসে থাকতেন৷ তাঁর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর জেলায়। কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মুনতাসির মেহেদী জানান, তাওহীদুল কলেজ শাখা ছাত্রদলের আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন৷
অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রলীগের নতুন কমিটির একটি পক্ষ তাঁর ওপর হামলা করেছে। শিক্ষার্থী নিহতের খবর পেয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল হাসপাতাল এলাকায় অবস্থান করছে। ওসি আতাউর রহমান জানান, লাশ কলেজ কর্তৃপক্ষ হস্তান্তর করলে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের আবু সিনা ছাত্রাবাসের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাওহীদুল ছাত্রলীগের নতুন কমিটির নেতা-কর্মীদের আক্রোশের মুখে পড়েন। প্রায় এক সপ্তাহ তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হয়৷ গতকাল সন্ধ্যায় ছাত্রাবাসে গিয়ে তাওহীদুলকে ক্যাম্পাস ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়৷ এ সময় বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে রামদা দিয়ে তাঁকে বেশ কয়েকটি আঘাত করা হয়৷
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রাবাসের এক ছাত্রদল নেতা বলেন, কয়েক দিন আগে ছাত্রলীগের নতুন কমিটির একটি পক্ষ তাঁর কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেছিল। তখন তাওহীদুল ছাত্রলীগকে ‘চাঁদাবাজ’ বলে গালি দেন। এর জের ধরে ছাত্রলীগের ওই পক্ষটি তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। এ কারণে যেকোনো সময় তাঁর ওপর হামলা হতে পারে—এই আশঙ্কার কথা তাওহীদুল কলেজ অধ্যক্ষকে মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন৷
তবে গতকাল রাতে যোগাযোগ করলে অধ্যক্ষ এ বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কে বা কারা তাঁকে ফেলে রেখে যায়। তাঁকে অবচেতন অবস্থায় দেখা গেছে। সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে আইসিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল।
ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ ওঠা প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই। একজন ছাত্র খুন হয়েছে বলে আমি পুলিশকে জানিয়েছি। কারা খুন করেছে—বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখবে।’
ছাত্রলীগের কারা হামলা করেছে, এ ব্যাপারে জানতে কলেজ ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি সৌমেন দের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট: তাওহীদুল হত্যার প্রতিবাদে আজ থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডেকেছে ছাত্রদল৷ কলেজ ছাত্রদল সভাপতি আসলামুল ইসলাম এ কথা জানান৷