সাক্ষাৎকার

ছাত্ররা জড়িত ছিল না, জড়িয়ে ফেলা হয়েছে : এ টি এম মইনুল হোসেন

রাজধানীর নিউমার্কেটের দোকানমালিক-কর্মচারীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সংঘর্ষের চিত্র
ছবি: ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

ঢাকা কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে নিউমার্কেটের দোকানমালিক ও কর্মচারীদের সংঘর্ষের ঘটনায় এখনো এক ধরনের অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে ওই এলাকায়। ছাত্রদের আবাসিক ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা এখনো ছাত্রাবাস ছাড়েনি। শুধু এবারই নয়, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে ওই এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। এসব নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিবেদক মোশতাক আহমেদ

প্রশ্ন

প্রথম আলো : গত সোমবার রাত ও গতকালের সংঘর্ষের ঘটনায় আহতদের মধ্যে বেশ কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থীও আছেন, তাদের সর্বশেষ অবস্থা কি?

এ টি এম মইনুল হোসেন: আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন মোশারফ হোসেন বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছে। শিক্ষামন্ত্রী গতকাল তাঁকে দেখে এসেছেন। আজ শিক্ষা উপমন্ত্রীও দেখে এসেছেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও দেখে এসেছেন। তাঁর অবস্থা এখন আগের চেয়ে ভালো। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন ছাত্র ভর্তি আছে। তারাও আগের চেয়ে ভালো আছে। এর বাইরে প্রায় দুই শতাধিক ছাত্র প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় আছে। তাঁরাও আমাদের নজরে আছে।

ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ টি এম মইনুল হোসেন
প্রশ্ন

প্রথম আলো: ঘটনার সূত্রপাত হলো গত সোমবার। মাঝে থেমে গিয়ে আবার গতকাল সকাল থেকে সারা দিনই সংঘর্ষ চলল। এই দীর্ঘ সময়ে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করে কি পরিস্থিতি থামানো যেত না ?

এ টি এম মইনুল হোসেন: পরশু রাতে সংঘর্ষের পর আমরা আমাদের ছাত্রদের বুঝিয়ে নিয়ে আসি এবং ছাত্ররা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। কিন্তু হঠাৎ করে গতকাল মঙ্গলবার সকালে মার্কেটের লোকজন এসে আক্রমণ চালায় এবং ঢাকা কলেজের ভেতরেও ঢুকে যায়। এরপরেই সমস্যাটি হয়।

কথা–কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষ বাধে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের দোকান কর্মচারীদের মধ্যে। এ সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। মুখোমুখি অবস্থান নেয় দুই পক্ষ। তাদের পার্টাপাল্টি ধাওয়ায় আহত হন কয়েকজন। গতকাল দুপুর পৌনে একটায় রাজধানীর মিরপুর রোডের নিউমার্কেট এলাকায়
প্রশ্ন

প্রথম আলো: শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তারা বলছে পুলিশ ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়েছে। এখানে আপনি কি কোথাও কি গাফিলতি দেখছেন ?

এ টি এম মইনুল হোসেন: ছাত্ররা এ বিষয়ে যে বক্তব্য দিয়েছে সেগুলো আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। শিক্ষকেরাও কাঁদানে গ্যাসের শিকার হয়েছেন। ছাত্ররা তখন কলেজের ভেতরে। তখন কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার দরকার ছিল না। এটা বাড়াবাড়ি বলেই আমার মনে হয়েছে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: শিক্ষার্থীদের গতকাল বিকেলের মধ্যেই কলেজের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, কিন্তু ছাত্ররা তা মানেনি, এখন কি করবেন?

এ টি এম মইনুল হোসেন: শিক্ষা মন্ত্রণালয় এ নির্দেশ দিয়েছিল, আমরা বাস্তবায়ন করেছি। তবে, আমরা আশা করছি, আজকের মধ্যে ছাত্ররা ছাত্রাবাস ত্যাগ করবে।

প্রশ্ন

প্রথম আলো: আগেও বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, এর স্থায়ী সমাধান কি নেই? আপনি কি বলবেন?

এ টি এম মইনুল হোসেন : এর স্থায়ী সমাধান করতে হলে প্রথমেই এই এলাকার বিক্রেতাদের (দোকানদার) মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে। কারণ এখানকার বিক্রেতাদের আচরণ ও মানসিকতা খুবই বাজে। যারা এখানে কিনতে আসেন, তারা বাজে আচরণের শিকার হন। বাইরে থেকে যারা আসেন তারা হয়তো মেনে যান। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজে অথবা ইডেন মহিলা কলেজের কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে যদি এটি ঘটে তখন তারা মানতে চায় না। এ ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো হয়। আর এবার যে ঝামেলা হয়েছে সেটি তো পুরোটাই তাদের ( নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী) অভ্যন্তরীণ বিষয় থেকে শুরু। এখানে ছাত্ররা জড়িত ছিল না, জড়িয়ে ফেলা হয়েছে।