মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে আমদানি করা এলএনজিবাহী জাহাজ। মাতারবাড়ীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে
মহেশখালীর গভীর সমুদ্রে আমদানি করা এলএনজিবাহী জাহাজ। মাতারবাড়ীর ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে

চড়া দামেই আমদানি হবে এলএনজি

কয়েক গুণ খরচ বেড়েছে খোলাবাজার থেকে গ্যাস কেনায়। এ বছর এটি আরও বাড়বে। বাড়তি বিল দিতে হবে গ্যাসের গ্রাহকদের।

তিন বছর আগে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি শুরুর মধ্য দিয়ে গ্যাস–সংকট সমাধানে বড় ধরনের প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল। এলএনজি আমদানিতে সরকার দীর্ঘ মেয়াদে দুটি চুক্তিও করেছিল। এরপর আমদানির চাহিদা বাড়লেও নতুন করে দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তি করতে পারেনি সরকার। বাড়তি চাহিদা মেটাতে শুরু হয় খোলাবাজার (স্পটমার্কেট) থেকে এলএনজি কেনা।

দীর্ঘ মেয়াদে নতুন করে চুক্তি করতে না পারার খেসারত দিতে হচ্ছে গত বছর থেকে। কারণ, এরই মধ্যে খোলাবাজারে এলএনজির দাম গত বছর পাঁচ গুণ বেড়ে যায়। গত বছর আমদানি করা এলএনজির ২০ শতাংশ এসেছে খোলাবাজার থেকে। এ বছর আসবে আমদানির প্রায় অর্ধেক। আগামী দুই বছরে বিশ্ববাজারে গ্যাসের দাম বাড়তি থাকার পূর্বাভাস আছে। তাই চড়া দামেই আমদানি হবে এলএনজি। এর ফলে সরকারের ভর্তুকি বাড়বে। গ্যাসের দাম বাড়বে গ্রাহক পর্যায়ে।

বর্তমানে দিনে গ্যাসের মোট চাহিদা ৩৭০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৩০ কোটি ঘনফুট। ঘাটতি থাকে প্রায় ১৪০ কোটি ঘনফুট গ্যাস। এ ঘাটতির কিছুটা পূরণ হচ্ছে আমদানি করা এলএনজির মাধ্যমে।

এ বছর দিনে ৮৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস আমদানির লক্ষ্যমাত্রা আছে পেট্রোবাংলার। এর জন্য এলএনজি বহনকারী ১০৩টি কার্গো আমদানি করতে হবে। এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার ও ওমান থেকে পাওয়া যাবে ৫৬টি। বাকি ৪৭টি কিনতে হবে খোলাবাজার থেকে।

দেশে এলএনজি আমদানির দায়িত্বে আছে পেট্রোবাংলার অধীন রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (আরপিজিসিএল)। এ কোম্পানির দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, বর্তমানে খোলাবাজারে ইউনিট প্রতি এলএনজির দাম ৩০ ডলারের বেশি। আগামী দুই বছরে এটি ২০ ডলারের নিচে নামার তেমন কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এখন কাতার থেকে ১০ দশমিক ৭ ডলার এবং ওমান থেকে ১০ দশমিক ২ ডলারে এলএনজি আমদানি করা হচ্ছে।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় কাতার গ্যাস ও ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল থেকে এলএনজি আনে বাংলাদেশ। দেশে প্রথম ২০১৮ সালের এপ্রিলে এলএনজি কার্গো আসে কাতার থেকে। এরপর এ দুটি দেশ থেকে ২০১৯ সালে ৬৩টি এবং ২০২০ সালে ৬৬টি কার্গো আসে। গত বছরেও এসেছে ৬৫টি কার্গো। এর মধ্যে কাতার থেকে এসেছিল ৩৯টি কার্গো এবং ওমান থেকে ২৪টি কার্গো। এর বাইরে খোলাবাজার থেকে আমদানি করা হয়েছে ১৬টি কার্গো। এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথম খোলাবাজার থেকে এলএনজি কার্গো আসে।

সরবরাহ বাড়াতে কাতার ও ওমানকে চিঠি দিয়ে গত বছর অনুরোধ করেছিল পেট্রোবাংলা। তাতে কাজ হয়নি। বরং সরবরাহ কমানোর কথা জানিয়েছে ওমান। চুক্তি অনুযায়ী তারা ১৬টি কার্গো সরবরাহ করবে। আর কাতার দেবে সর্বোচ্চ ৪০টি। তবে ইউক্রেন পরিস্থিতি জটিল হলে এ দুই দেশ থেকে সরবরাহ কমার শঙ্কা আছে। ইউরোপ থেকেও এ দুই দেশে গ্যাস আমদানির জন্য যোগাযোগ করা হচ্ছে। ইউরোপের ৫০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহ করে রাশিয়া। এ সরবরাহ কমে গেলে ইউরোপের গ্যাস আমদানি চাহিদা বেড়ে যাবে।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, খোলাবাজার থেকে কম দামেই আমদানি শুরু হয়। গত বছর পাঁচ গুণ বেশি দামে কিনতে হয়েছে। এমন পরিস্থিতি আগে অনুমান করা যায়নি, পূর্বাভাসও ছিল না। বিশ্ববাজারে দামের হঠাৎ উত্থানে সংকট বেড়ে গেছে, ছোট দেশের জন্য এটা কঠিন। সরকারের বরাদ্দ করা ভর্তুকি ছাড়িয়ে গেছে। তবু শিল্প বিনিয়োগের স্বার্থে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ ধরে রাখতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির সুযোগ যেভাবে হারাল

খোলাবাজার থেকে প্রথমবার প্রতি ইউনিট এলএনজি কেনা হয়েছিল চার ডলারের কম দামে। সর্বোচ্চ ৩৭ ডলার করে কেনা হয় সর্বশেষ অক্টোবরে। নতুন করে কেনার জন্য ইতিমধ্যে দরপত্র আহ্বান করেছে আরপিজিসিএল। এবারও ৩০ ডলারের নিচে দাম পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাঁরা বলছেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় এলএনজির গড় দাম কখনোই ১০ ডলারের বেশি হয়নি। চুক্তি অনুযায়ী ওমান ও কাতারের দুই কোম্পানির কাছ থেকে পাওয়া এলএনজির ইউনিট মূল্য ৬ থেকে ১০ ডলারের মধ্যেই থাকছে।

দেশে এখন মহেশখালীর গভীর সমুদ্রবন্দরে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল আছে। এর একটি টার্মিনাল চালাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি ও অন্যটি দেশীয় কোম্পানি সামিট। দুটি টার্মিনাল দিয়ে দিনে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা আছে এখন।

জ্বালানি বিভাগ সূত্র বলছে, দিনে ৮৫ কোটি ঘনফুট গ্যাস আমদানি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ৪৬ কোটি পাওয়া যাবে ওমান ও কাতার থেকে। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির আওতায় আরও ৩০ থেকে ৩৫ কোটি ঘনফুট আমদানি বাড়াতে চায় সরকার। চুক্তি করতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গত বছর আলোচনাও শুরু করে সরকার। তাদের কারও সঙ্গেই এখন পর্যন্ত চুক্তি করা যায়নি। এর মধ্যে আছে বেসরকারি কোম্পানি সামিট ও আরব আমিরাতের এমিরেটস ন্যাশনাল অয়েল কোম্পানি। কাতারের সঙ্গেও আরেকটি চুক্তি করার পরিকল্পনা আছে। বিশ্ববাজারে দাম চড়া থাকায় দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এখন আগ্রহ দেখাচ্ছে না তারা।

এগোচ্ছে না নতুন টার্মিনালের কাজ

বিদেশে থেকে এলএনজি আনার পর টার্মিনালে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে তা প্রাকৃতিক গ্যাসে রূপান্তর করা হয়। এরপর সেখান থেকে গ্যাসের জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে।

দেশে এখন মহেশখালীর গভীর সমুদ্রবন্দরে দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল আছে। এর একটি টার্মিনাল চালাচ্ছে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি ও অন্যটি দেশীয় কোম্পানি সামিট। দুটি টার্মিনাল দিয়ে দিনে ৯০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা আছে এখন। গত ১৮ নভেম্বর সামিটের টার্মিনালের মুরিং লাইন ছিঁড়ে যায়। ফলে এলএনজিবাহী কার্গো ভিড়তে পারছে না। ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মুরিং লাইনটি মেরামত হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি আগে করা গেলে এমন সমস্যায় পড়তে হতো না। উচ্চ দামে কেউ এখন চুক্তি করতে চাইবে না। বাংলাদেশের জন্যও এটা ভালো হবে না। তাই এখন বাড়তি দামেই খোলাবাজার থেকে আমদানি করতে হবে।
ম. তামিম, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী

রপ্তানি বাড়ায় এখন শিল্পে গ্যাসের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস আমদানি বাড়ানোর নতুন অবকাঠামো নির্মাণে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজেও তেমন গতি নেই।

দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা এলাকার গভীর সমুদ্রে আরও একটি ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণে গত বছর পৃথক প্রস্তাব দিয়েছে এক্সিলারেট এনার্জি ও সামিট। এসব প্রস্তাব যাচাই–বাছাই করছে জ্বালানি বিভাগ। এ ছাড়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর মাতারবাড়ী এলাকায় স্থলভাগে একটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে সামিট। এর আগে গত বছর আরও ১৫টি বিদেশি কোম্পানি মাতারবাড়ীতে টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছে সরকারের কাছে। ইতিমধ্যে আগ্রহীদের মধ্য থেকে একটি সংক্ষিপ্ত তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু ওই দুটি এলাকার কোনোটিতেই প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা যায়নি।

ভারতের এলএনজি আনায় ধীরগতি

নতুন টার্মিনাল নির্মাণের কাজে যেমন গতি নেই, তেমনি প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে পাইপলাইনে করে সরাসরি এলএনজি আনার কাজও এগোয়নি। পশ্চিমবঙ্গের একটি টার্মিনাল থেকে সাতক্ষীরার ভোমরা হয়ে এলএনজি রপ্তানির বিষয়টি যাচাই করে দেখছে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল কোম্পানি লিমিটেড (আইওসিএল)। সাতক্ষীরা থেকে খুলনা পর্যন্ত ৬০ কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণ করে জাতীয় গ্রিডে এ গ্যাস যুক্ত হবে। সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজটি এখনো শেষ করেনি আইওসিএল।

ভারত থেকে পাইপলাইনে এলএনজি আনার জন্য দেশটির বেসরকারি কোম্পানি এইচ-এনার্জি এবং পেট্রোবাংলার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে গত বছরের জুনে। দীর্ঘ মেয়াদে এলএনজি সরবরাহের কথা রয়েছে তাদের। কলকাতা বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও একটি সমঝোতা স্মারক সই করেছে এইচ–এনার্জি। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় একটি এলএনজি টার্মিনাল তৈরি করবে তারা। এ টার্মিনাল থেকে এলএনজি বাংলাদেশে পাঠানো হবে। ভারতে তারা কাজ এগিয়ে নিচ্ছে বলে জানিয়েছে পেট্রোবাংলা সূত্র। তবে এখন পর্যন্ত কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি হয়নি পেট্রোবাংলার।

আমদানি কমলে সংকট বাড়বে

পেট্রোবাংলা বলছে, লক্ষ্যমাত্রার পুরোটা আমদানি হলেও ৫৫ কোটি ঘনফুটের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। মাঝে আমদানি কমায় ঘাটতি বেড়ে ৭০ কোটি ছাড়িয়ে যায়। গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে সিএনজি স্টেশন দিনে চার ঘণ্টা করে বন্ধ রাখা হচ্ছে। অনেক বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে আছে গ্যাসের অভাবে। শিল্পেও যথাযথ গ্যাস না পাওয়ার অভিযোগ আছে। আগামী দুই বছরে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি এলএনজি বিদ্যুৎ উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। এসব কেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহের এখনো কোনো চুক্তি হয়নি। তাই আমদানি কমে গেলে দেশে গ্যাস সরবরাহের সংকট বেড়ে যাবে।

পেট্রোবাংলার দুজন কর্মকর্তা জানান, দুই বছর আগেও দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি সরবরাহের প্রস্তাব এসেছিল। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় চুক্তি করা যায়নি। আবার চাইলেও খোলাবাজার থেকে তাৎক্ষণিক দামে এলএনজি কিনতে পারে না আরপিজিসিএল। সরকারি অনুমোদন প্রক্রিয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় লেগে যায়। তাই দুই সপ্তাহ পরের দাম অনুমান করে বিদেশি কোম্পানি দাম চায়। এতেও দাম বেশি পড়ে যায়। সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় গ্যাস খাতের অনেক কাজ সময়মতো হয়নি।

খরচ বাড়াচ্ছে এলএনজি

গ্যাস সরবরাহের খরচের একটি হিসাব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) পাঠিয়েছে পেট্রোবাংলা। এতে বলা হয়, দেশীয় কোম্পানির উৎপাদিত গ্যাসের খরচ প্রতি ইউনিটে ১ টাকা ২৭ পয়সা। আর দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে উৎপাদিত গ্যাসের খরচ ২ টাকা ৯১ পয়সা। আর আমদানি করা গ্যাসের ক্ষেত্রে এ বছর প্রতি ইউনিটে খরচ হবে ৫০ টাকা ৩৯ পয়সা। কমিশনকে দেওয়া চিঠিতে পেট্রোবাংলা বলেছে, এ বছর এলএনজি আমদানির জন্য ৪৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে।

পেট্রোবাংলার দুজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বাড়তি দামে আমদানি করায় ইউনিট প্রতি গড় খরচ ২০ টাকা ৩৬ পয়সা পড়ে যাচ্ছে। আর গ্রাহকের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে গড়ে ৯ টাকা ৩৭ পয়সা। তাই দাম শতভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বিইআরসির কাছে পাঠানো পেট্রোবাংলার হিসাব বলছে, এ বছর মোট সরবরাহ করা গ্যাসের ৭৩ শতাংশ আসবে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে। এর জন্য পেট্রোবাংলার খরচ হবে প্রায় ৫ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা। আর বাকি ২৭ শতাংশ গ্যাস আসবে আমদানি হয়ে। যার জন্য পেট্রোবাংলার খরচ হবে ৪৪ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। বাড়তি দামে গ্যাস আমদানির জন্যই গ্রাহকের ওপর চাপ বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

বাড়ছে ভর্তুকি, বাড়ছে গ্যাসের দাম

চড়া দামে এলএনজি আমদানি করতে গিয়ে সরকারের ভর্তুকি বাড়ছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই এলএনজি খাতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি দিয়েছে সরকার। ভর্তুকির চাপ কমাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ইতিমধ্যে গ্রাহকপর্যায়ে গ্যাসের দাম শতভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব জমা পড়েছে বিইআরসির কাছে। এটি যাচাই–বাছাই করে দেখছে বিইআরসি। শতভাগ না হলেও আগামী মাসে দাম কিছুটা বাড়তে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ম. তামিম প্রথম আলোকে বলেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি আগে করা গেলে এমন সমস্যায় পড়তে হতো না। উচ্চ দামে কেউ এখন চুক্তি করতে চাইবে না। বাংলাদেশের জন্যও এটা ভালো হবে না। তাই এখন বাড়তি দামেই খোলাবাজার থেকে আমদানি করতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন পরিস্থিতির উন্নতি হলে দাম কমতে পারে।