মহম্মদপুরের বিনোদপুর ইউপি

চেয়ারম্যান পলাতক দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত

শিকদার মিজানুর রহমান
শিকদার মিজানুর রহমান

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের নেতা শিকদার মিজানুর রহমান নিজ দলের সাধারণ সম্পাদকের করা চাঁদাবাজি মামলায় পলাতক রয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে ইউপির দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পরিষদে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ।

মিজানুর রহমান বিনোদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে তিনি জয়ী হন।

ইউনিয়ন পরিষদের দেওয়া তথ্যমতে, মহম্মদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবদুল মান্নানের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় ১ জুলাই মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করা হয়। আবদুল মান্নান বাদী হয়ে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন। চেয়ারম্যান মামলার প্রধান আসামি।

গত ২৯ জুন সকালে মোটরসাইকেলে মহম্মদপুরের বেথুলিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে মাগুরায় আদালতে যাওয়ার পথে মাগুরা-মহম্মদপুর সড়কের তল্লাবাড়িয়া এলাকায় তিন-চারজন যুবক মান্নানের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন। এতে তিনি আহত হন। মান্নানের অভিযোগ, ওই ঘটনায় মিজানুর রহমান জড়িত।

এ ঘটনায় ১ জুলাই অভিযুক্ত মিজানুর রহমানকে প্রধান করে ছয়জনের বিরুদ্ধে মহম্মদপুর থানায় চাঁদাবাজির মামলা করেন আবদুল মান্নান। মামলায় অভিযোগ করা হয়, দাবি করা ২ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে তাঁর ওপর ওই হামলা চালানো হয়। এরপর থেকেই মিজানুর রহমান পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক সভায় মিজানুর রহমানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

আবদুল মান্নানের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁর সমর্থকেরা ওই দিন ঘুল্লিয়া, তল্লাবাড়িয়া ও বিনোদপুর গ্রামে মিজানুর রহমানের সমর্থক আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের শতাধিক বাড়ি-ঘরে ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন। দিনভর ধরে চলে ওই ধ্বংসযজ্ঞ। আতঙ্কে গ্রাম তিনটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। ঘটনার ১০ দিন পরও এসব এলাকার জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়নি। এখনো অনেক পরিবার বসতবাড়িতে ফিরতে পারেনি।

স্থানীয় লোকজন জানান, মামলার কারণে চেয়ারম্যান পলাতক থাকায় পরিষদের উন্নয়নমূলক কাজসহ দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। গ্রাম্য সালিস হচ্ছে না। এ ছাড়া জন্মনিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদপত্র পেতে সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

জানতে চাইলে ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, ‘নিয়ম থাকলেও চেয়ারম্যান প্যানেল চেয়ারম্যান নিয়োগ করেনি। এখন চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান কেউই নেই। তাই পরিষদ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। ইউনিয়নের কোনো কাজকর্মই এখন হচ্ছে না।’

কথা বলার জন্য চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে দুই দিন ধরে চেষ্টা করে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরীকুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান চাঁদাবাজির মামলার প্রধান আসামি। তিনি পলাতক রয়েছেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

জিজ্ঞেস করা হলে মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, ‘নিয়মানুযায়ী ইউনিয়নে প্যানেল চেয়ারম্যান থাকার কথা। দাপ্তরিক কোনো কাজে অসুবিধা হচ্ছে বলে আমাকে ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ বা পরিষদের কেউ জানাননি।’