কোয়াডে বাংলাদেশকে যোগ না দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত যে মন্তব্য করেছেন, তার ওপর নজর আছে যুক্তরাষ্ট্রের। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারের বিষয়েও তারা শ্রদ্ধাশীল।
গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন। ব্রিফিংয়ের ভাষ্য মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন চারটি দেশের অনানুষ্ঠানিক নিরাপত্তা সংলাপ কোয়াড নামে পরিচিত, যেখানে অন্য দেশগুলো হলো ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়া। কোয়াডকে চীনবিরোধী জোট হিসেবে মনে করছে বেইজিং।
গত সোমবার ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং কূটনৈতিক সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন, বাংলাদেশ কোয়াডে গেলে দুই দেশের সম্পর্ক খারাপ হবে। যদিও পরদিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন চীনের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কোয়াড থেকে এখনো বাংলাদেশকে যোগ দিতে কোনো অনুরোধ জানানো হয়নি। তাই চীনের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্যকে আগ বাড়িয়ে বলা হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ।
অবশ্য এরই মধ্যে চীনের রাষ্ট্রদূত ওই মন্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে। সূত্রটি জানায়, আজ বুধবার পররাষ্ট্রসচিবের কাছে চীনের রাষ্ট্রদূত নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি ওই মন্তব্য যে ‘আউট অব কনটেক্সট’ বলেছেন, তা-ও উল্লেখ করেছেন।
গত সোমবার কোয়াড নিয়ে করা চীনা রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য ঘিরে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে আলোচনা চলছে।
চীনা রাষ্ট্রদূতের ওই মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইসকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কোয়াড সম্প্রসারণের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? এ ছাড়া রাষ্ট্রদূত লি জিমিং যে মন্তব্য করেছেন তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়া কী?
নেড প্রাইস বলেন, ‘আমরা চীনের রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য লক্ষ করেছি। আমরা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। সেই সঙ্গে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকারের বিষয়েও আমরা শ্রদ্ধাশীল। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের অত্যন্ত শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের অংশীদারদের সঙ্গে আমরা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি থেকে জলবায়ু পরিবর্তন, মানবিক ইস্যুসহ বিস্তৃত পরিসরে নিবিড়ভাবে কাজ করি।’
কোয়াডের প্রসঙ্গ টেনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আগেও বলেছি কোয়াড হচ্ছে একটি অনানুষ্ঠানিক ও জরুরি বহুপক্ষীয় উদ্যোগ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের মতো সমমনা গণতান্ত্রিক দেশগুলো ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে সমন্বিতভাবে কাজ করে। যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবাধ ও মুক্ত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা।’