শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিনের জন্মদিনের দিন বিদায় নিলেন তাঁরই শিষ্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর। পঞ্চাশ দশকের খ্যাতিমান শিল্পীদের অন্যতম চিত্রশিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর আজ শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে নিজের বাসভবনে তাঁর মৃত্যু হয় (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
প্রথম আলোকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন শিল্পী মনিরুল ইসলাম। তিনি জানান, আজ বিকেলে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীরের মরদেহ নেওয়া হবে চারুকলা অনুষদ ক্যাম্পাসে। সেখানে আসরের নামাজের পর তাঁর জানাজা হবে। জানাজা শেষে মরদেহ পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সাতক্ষীরায় নেওয়া হবে দাফনের জন্য।
সাম্প্রতিক সময়ের জ্যেষ্ঠ শিল্পীদের অন্যতম শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ৬০ বছরের বেশি সময় চিত্রকলা চর্চা করেছেন। দেশের সঙ্গে তাঁর যে আত্মিক বন্ধন রয়েছে, তার প্রভাব বারবার উঠে এসেছে তাঁর শিল্পকর্মে।
সৈয়দ জাহাঙ্গীর ১৯৩৫ সালের ১ জানুয়ারি সাতক্ষীরা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর সৃষ্টিকর্মের বেশির ভাগই গ্রাম এবং গ্রামের প্রকৃতি নিয়ে। প্রকৃতি এবং ঋতু পরিবর্তন ছিল তাঁর ছবির অন্যতম বৈশিষ্ট্য। তাঁর বিখ্যাত প্রদর্শনী ও সিরিজের নাম হচ্ছে ‘আত্মার উজ্জীবন’, ‘উল্লাস’, ‘ধ্বনি’, ‘অজানা অন্বেষা’। তাঁর নানা চিত্রকর্মের মধ্যে ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সালের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে করা কাজ ‘আত্মার উজ্জীবন’ উল্লেখযোগ্য।
প্রায় ২২ বছর পেশাদার চিত্রকর হিসেবে কাজ করার পর তিনি ১৯৭৭ সালে শিল্পকলা একাডেমির শিল্পকলা বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন। সৈয়দ জাহাঙ্গীর শিল্পকলা একাডেমির পরিচালক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন এবং শিল্পকলা একাডেমিতে চারুকলা বিভাগ চালু করেন।
সৈয়দ জাহাঙ্গীর ১৯৮৫ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৯২ সালে চারুশিল্পী সংসদ তাঁকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করে। ২০০০ সালে মাইকেল মধুসূদন পুরস্কার এবং ২০০৫ সালে শশীভূষণ সম্মাননা লাভ করেন তিনি।