চিকিৎসকদের জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জারি হওয়া আদেশটি বাতিল এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জারি হওয়া আদেশ স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশে কেউ চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত হলে সেনাবাহিনীর তল্লাশি চৌকি বা থানার ওসিকে জানানোর কথা বলা হয়েছিল। অন্যদিকে অধিদপ্তরের চিঠিতে করোনাভাইরাসের উপসর্গ আছে—এমন রোগীকে ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) ছাড়াই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ জারি করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এই দুই আদেশ নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে।
ওই আদেশ দুটি গত রাতেই বাতিল করে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় সাধারণ রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা, ইমার্জেন্সি চিকিৎসা (জরুরি সেবা) এবং নতুন রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে না। এমনকি ভর্তি রোগীদের ছাড়াও হচ্ছে না। এতে জনগণ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং ব্যাপকভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। সংশোধিত নতুন ওই বিজ্ঞপ্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের জারি করা আদেশ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যা হয়েছে সেটা মূর্খতা। আদেশটি আমাকে না জানিয়ে করা হয়েছে। অফিস আজ বন্ধ। কীভাবে এই আদেশ এল সে সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। রাতে আমি জানার পরই আদেশটি বাতিল করে দিতে বলেছি।’
নাম না প্রকাশ করার শর্তে একটি সূত্র প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসের উপসর্গ আছে, এমন রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না—এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ ধরনের নির্দেশ আসে। চিকিৎসকেরা মনে করেন, ভুক্তভোগী অভিযোগ জানাতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বা করোনা সেলের একটা যোগাযোগের নম্বর দেওয়া যেত। সেনাবাহিনীর টহল সদস্য বা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) দিয়ে চিকিৎসা নিশ্চিতের ব্যবস্থা অন্যায়।
ওই সূত্রটি আরও বলেন, সারা দুনিয়াতেই পিপিইর (পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) যৌক্তিক ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের কোথাও কোথাও এখন চর্মরোগের চিকিৎসকেরাও পিপিই চাইছেন। সত্যিকার অর্থে যাঁদের প্রয়োজন, তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সে জন্যই অধিদপ্তর আদেশটি করেছিল। কিন্তু এতে ভুল বার্তা গেছে।
অধিদপ্তরের নতুন আদেশে বলা হয়েছে, আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আগের আদেশটি স্থগিত করা হয়েছে।