>
সাজেদা চৌধুরী অসুস্থ থাকায় তাঁকে নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আবদুর রহমান মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে শোনা যাচ্ছে।
ফরিদপুরের চারটি আসনের মধ্যে দুটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে ব্যাপক জল্পনাকল্পনা চলছে। ফরিদপুর-২ আসনে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী অসুস্থ থাকায় তাঁকে ঘিরে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে মহাজোটের রাজনীতিতে জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সালের ভাগ্য প্রসন্ন হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। বেশি অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে ফরিদপুর-১ আসন নিয়ে। বর্তমান সাংসদ আবদুর রহমান দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন না বলে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন ২০ জন।
আলফাডাঙ্গা, বোয়ালমারী ও মধুখালী উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসন। এখানে যাঁরা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান সাংসদ ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহমান, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সাবেক সাংসদ কাজী সিরাজুল ইসলাম, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি আরিফুর রহমান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত সিকদার, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান দিলীপ রায়, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব ও রূপালী ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মঞ্জুর হোসেন বুলবুল, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খান মইনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
সাংসদ আবদুর রহমানকে এ আসনে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না—সম্প্রতি এ বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর আলোচনায় এসেছেন কাজী সিরাজুল ইসলাম, দিলীপ রায় ও মঞ্জুর হোসেন।
তবে হাল ছেড়ে দেয়নি কোনো পক্ষই। সাংসদের সহকারী একান্ত সচিব নির্মল কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, শেষ পর্যন্ত আবদুর রহমানই মনোনয়ন পাবেন। শেষ হাসি আমরাই হাসব।’
সাবেক সাংসদ সিরাজুল ইসলামের সহকারী একান্ত সচিব সুজিত কুমার দাস বলেন, ‘স্যার (সিরাজুল ইসলাম) যে শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পাবেন, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত।’
নগরকান্দা ও সালথা উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন ৭ জন। তাঁদের মধ্যে বর্তমান সাংসদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, তাঁর ছেলে আয়মন আকবর, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আতমা হালিম, সাবেক সাংসদ (জাতীয় পার্টি) ও জেলা শ্রমিক লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাইফুজ্জামান চৌধুরী জুয়েল প্রমুখ। দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি আলোচিত নাম সাজেদা চৌধুরী। তবে বর্তমানে তিনি অসুস্থ। আবার মহাজোটের রাজনীতিতে জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সালকে এ আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে।
নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ও দৃঢ় বিশ্বাস ও আস্থা, এ আসন থেকে আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কান্ডারি সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীই মনোনয়ন পাবেন। তিনি বেঁচে থাকতে অন্য কোনো নেতাকে এ আসন থেকে মনোনয়ন দেওয়া হবে না। তেমন ঘটনা ঘটলে তা আমাদের জন্য হবে দুর্ভাগ্যজনক।’
ফরিদপুরের দুটি আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলে জানিয়েছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। এর মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুর-৩ (সদর উপজেলা) আসনে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন। এখান থেকে আরও তিনজন দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। তাঁরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শামসুল হক ভোলা মাস্টার, খন্দকার মোশাররফের সাবেক সহকারী একান্ত সচিব সত্যজিৎ মুখার্জি ও বাংলা ৭১ পত্রিকার সম্পাদক প্রবীর সিকদার।
ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা, চরভদ্রাসন ও সদরপুর) আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহর মনোনয়ন নিশ্চিত বলে দাবি করেছেন তাঁর সমর্থকেরা।