ঢাকায় বাসচাপায় পা হারানো রোজিনা ঢাকা মেডিকেলে মারা গেছেন

হাসপাতালে রোজিনা আক্তার। ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া
হাসপাতালে রোজিনা আক্তার। ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া

বেপরোয়া যানবাহনের চাপায় হাত-পা হারানো মানুষের মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। এবার মারা গেলেন রাজধানীর বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ি এলাকায় বাসের চাপায় পা হারানো রোজিনা আক্তার।

আজ রোববার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোজিনার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. বাচ্চু মিয়া। তবে এ বিষয়ে চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

২০ এপ্রিল রাতে বিআরটিসির দোতলা বাসের চাপায় ডান পা হারান গৃহকর্মী রোজিনা। তাঁকে প্রথমে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) ভর্তি করা হয়। পরে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে আজ নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তাঁর মৃত্যু হয়।

১৬ এপ্রিল রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজেই মারা যান দুই বাসের প্রতিযোগিতায় ডান হাত হারানো রাজীব হোসেন। ৩ এপ্রিল সার্ক ফোয়ারার কাছে দুর্ঘটনায় রাজীবের হাত ছিঁড়ে যায়। শমরিতা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাজীবকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করা হয়। সাময়িক উন্নতির পর তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাজীবের মস্তিষ্ক অসাড় হয়ে যায়। সেই থেকে আর জ্ঞান ফেরেনি তাঁর।

হাসপাতালে রোজিনা আক্তার। ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া

রাজীবের হাত হারানোর এই ঘটনা এবং করুণ মৃত্যু ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়। রাজীব চলে যাওয়ার পর সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন রোজিনা। আজ তিনিও চলে গেলেন।

ঘটনার দিন বাড়ির কাছে বিআরটিসির বেপরোয়া দোতলা বাসের ধাক্কায় পড়ে যান রোজিনা। চালক তাৎক্ষণিকভাবে বাসটি থামালেও পরে তাঁর পায়ের ওপর দিয়েই চালিয়ে দিলে তাঁর ডান পা আলাদা হয়ে যায়। চালক শফিকুল ইসলামসহ বিআরটিসির বাসটি আটক করা হয় বলে তখন পুলিশ জানিয়েছিল। পরে রোজিনাকে উদ্ধার করে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক আবদুল গণি মোল্লাহ প্রথম আলোকে বলেছিলেন, জীবন বাঁচাতে প্রয়োজনে রোজিনার পায়ে আরও অস্ত্রোপচার লাগতে পারে। দুর্ঘটনায় তাঁর পায়ের চামড়া থেকে মাংসের স্তর পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। চামড়াটা মরে গেছে। আঘাতে মাংসপেশিও অকার্যকর হয়ে গেছে। কিডনি ও ফুসফুসে সংক্রমণের আশঙ্কাটাই এখন চিকিৎসকদের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ। সে জন্য প্রতিদিন তাঁর আঘাতের জায়গাটায় ড্রেসিং করতে হবে। প্রয়োজনে আরও অস্ত্রোপচার লাগবে।