চট্টগ্রামে যাত্রীকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় বাসের সেই সহকারী মো. মানিক সরকারকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার ভোররাত চারটার দিকে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
পিবিআই সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার হাজিরহাট হাসমত হাওলাদারের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরতলির সিটি গেট এলাকায় চলন্ত বাস থেকে রেজাউল করিমকে (৩৫) ফেলে দেওয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে বাসের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পান রেজাউল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে রেজাউলের শরীরের আঘাতের কথা উল্লেখ রয়েছে।
রেজাউলকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানায় পরদিন ২৮ আগস্ট দণ্ডবিধির ৩০২, ৩২৫ ও ৩৪ ধারায় মামলা হয়। নিহত রেজাউলের মামা আহমেদুর রহমান মামলাটি করেন।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাঈন উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোররাতে লক্ষ্মীপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে চট্টগ্রামে আনা হচ্ছে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাই তাঁকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ প্রয়োজন।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২৭ আগস্ট বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরের প্রবেশমুখ সিটি গেটের পাশে গ্ল্যাক্সো কার্যালয়ের সামনে রেজাউল করিমকে লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের একটি বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়। বাসের সহকারী মানিকের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার সূত্র ধরে তাঁকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে সহযাত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ।
নিহত রেজাউল সিটি গেট এলাকার কালিরহাটের ওয়ালি উল্লাহর ছেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট সিটি গেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক ঘণ্টা অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম নগরের চার নম্বর যাত্রাপথের লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের বাসটির মালিক মো. শাহাবুদ্দিন। তিনি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। বাসটির কাগজপত্রের মেয়াদ আগামী বছরের ২৯ জুলাই পর্যন্ত রয়েছে।
বাসের সহকারী মো. মানিক সরকার নগরের কৈবল্যধাম আবাসিক এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনিতে বাস করতেন। যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার পর তিনি এবং চালক গা ঢাকা দেন। এই ঘটনায় চালক এখনো গ্রেপ্তার হননি।