চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলামকে বিদেশে গবেষণার জন্য শিক্ষা ছুটি (এক্সট্রা অর্ডিনারি লিভ) দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নেদারল্যান্ডসের লাইডেন ইউনিভার্সিটিতে তিনি গবেষণা করার সুযোগ পেয়েছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু হয়ে গেলেও তিনি এখনো যেতে পারেননি।
গবেষণার এই সুযোগ পাওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী বিভাগের চেয়ারম্যানের কাছে ছুটির অনুমতির জন্য আবেদনও করেন তিনি। কিন্তু আবেদনের ১২ দিন চলে গেলেও এখনো মেলেনি অনুমতি। বিভাগের চেয়ারম্যান পারভিন সুলতানা বিভিন্ন অজুহাতে ছুটির আবেদন আটকে রেখেছেন বলে অভিযোগ করেন মাইদুল ইসলাম।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখালেখির কারণে ছাত্রলীগের হুমকির মুখে গত বছরের ১৫ জুলাই ক্যাম্পাস ছাড়েন মাইদুল ইসলাম। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন এক ছাত্রলীগ নেতা। ওই মামলায় গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৩৭ দিন কারাগার ছিলেন তিনি। ওই সময় তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত তুলে নেয় কর্তৃপক্ষ। সবশেষ ৩ সেপ্টেম্বর ৫৭ ধারায় এই মামলা চলতে পারে না মর্মে উচ্চ আদালতে রিট করেন মাইদুল।
বাদীপক্ষের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিট করার পর উচ্চ আদালত এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে বিদেশে যাওয়া নিয়ে কোনো নিষেধ নেই। ছয় মাস পর আবার সময় বাড়ানোর আবেদন করা হবে। আর এই মামলা চলবে না। কারণ, ৫৭ ধারা বাতিল হয়ে গেছে।’
শিক্ষক মাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘উচ্চ আদালতে মামলা স্থগিতের পর রায়ের কপিসহ বিভাগে ছুটির জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু আবেদনের সাত কর্মদিবস পেরিয়ে গেলেও বিভাগ থেকে ন্যূনতম উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
কেন ছুটি দেওয়া হচ্ছে না জানতে চাইলে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি পারভিন সুলতানা বলেন, প্ল্যানিং কমিটির সভা করে অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রারের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠির উত্তর আসলে বিষয়টি দেখা হবে।
ছুটির বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কে এম নুর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিঠি পাওয়ার পর মৌখিকভাবে প্ল্যানিং কমিটির সভা করার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু বিভাগের সভাপতি সভা করেননি। নিয়ম হচ্ছে, বিভাগের সভাপতি প্ল্যানিং কমিটির সভা করে ছুটির সুপারিশ করবেন। এরপর আমরা সেটা যাচাই করে ছুটি মঞ্জুর করব। কিন্তু বিভাগ থেকে ছুটির আবেদন না আসলে আমার কিছু করার নেই।’
দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য শিরীণ আখতার এই বিষয়ে বিভাগের সভাপতির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।