প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল রোববার বেলা ১১টায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে মূল টানেলের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করবেন। একই সঙ্গে তিনি উদ্বোধন করবেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ।
এই দুই প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের পাশে আউটার রিং রোড এলাকায় সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রকল্প দুটির মোট নির্মাণ ব্যয় হচ্ছে ১৩ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।
সড়ক ও সেতু বিভাগ কর্ণফুলীর মোহনায় (বঙ্গোপসাগর ও নদীর মিলনস্থল) ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ নির্মাণ করছে। কর্ণফুলীর দক্ষিণ তীর তথা আনোয়ারা ও কর্ণফুলী উপজেলা টানেলের মাধ্যমে মূল নগরের সঙ্গে যুক্ত হবে। চীনের সাংহাইয়ের আদলে গড়ে উঠবে দুই শহরের সমন্বয়ে একটি নগর। ২০১৭ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে এই টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
সড়ক ও সেতু বিভাগের এই প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। নগরের পতেঙ্গা থেকে শুরু হয়ে এই টানেল দক্ষিণ চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্তে যুক্ত হবে। নদীর তলদেশে টানেলের দৈর্ঘ্য হবে ৩ হাজার ৪০০ মিটার (প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার)। কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে গাড়ি যাওয়ার জন্য একটি এবং আসার জন্য আরেকটি টিউব তৈরি হবে, যা টানেল নামে পরিচিত। প্রতিটি টিউবের প্রস্থ হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার। দুটি টিউবে গাড়ি চলাচলের জন্য দুটি করে লেন থাকবে। দুটি টিউবের ন্যূনতম দূরত্ব থাকবে ১১ মিটার। আর টানেলটি নদীর তলদেশ থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ মিটার এবং সর্বনিম্ন ১২ মিটার মাটির গভীরে নির্মিত হবে।
প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই টানেল নির্মিত হলে সেখানে আধুনিক পর্যটনের বিকাশ গড়ার পাশাপাশি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব কমবে ৩৪ কিলোমিটার।
এদিকে চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৬ কিলোমিটার। এতে গাড়ি ওঠা-নামার জন্য ২৪টি র্যাম্প (ওঠা-নামার পথ) থাকবে। যেগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইতিমধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপকে নির্মাণকাজের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।
সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম প্রথম আলোকে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মিত হলে চট্টগ্রাম নগরের যানজট অনেকটাই নিরসন হবে। তখন নগর থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিমানবন্দরে আসা-যাওয়া করা যাবে।