৩২টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন। ভোটের প্রচারে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতি নেই।
একদিকে মহিউদ্দিন চৌধুরী, অন্যদিকে আ জ ম নাছির উদ্দীন—আড়াই দশকের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ ছিল তাঁদের কাছে। এই সময়ে মোট পাঁচবার সিটি করপোরেশন নির্বাচন হয়েছে। চারবারই দলের প্রার্থী ছিলেন মহিউদ্দিন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের নির্বাচনে তাঁর পরিবর্তে দলের মনোনয়ন পেয়ে মেয়র হন নাছির। এবার নাছিরের জায়গায় মনোনয়ন পেয়েছেন মহিউদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত রেজাউল করিম। এই একটি চমক ছাড়া ভোটের রাজনীতিতে ঘুরেফিরে আওয়ামী লীগের পুরোনো দ্বন্দ্বের কথাই আলোচনায় আসছে।
মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর (২০১৭ সালের ডিসেম্বরে) পর তাঁর অনুসারীদের নেতৃত্বে চলে আসেন ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অন্যপক্ষে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির তাঁর অনুসারীদের নিয়ে পৃথক অবস্থান ধরে রেখেছেন।
এমন পরিস্থিতিতে ভোটের লড়াইয়ে বিএনপির পাশাপাশি ঘরের বিরোধ নিয়েও ভাবতে হচ্ছে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীকে। ঠিক এ জায়গায় কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছেন ভোটের প্রচারের শুরু থেকেই সক্রিয় থাকা বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন। তিনি চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি। স্থানীয় নেতারা তাঁর সঙ্গে থাকলেও দলের কেন্দ্রীয় নেতারা অবশ্য এখনো তাঁর প্রচারে সেভাবে নেই। এ নিয়ে নেতা–কর্মীদের মধ্যে নানা আলোচনা চলছে।
এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন হচ্ছে। ২৭ জানুয়ারি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটার ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির বাইরে আরও ৫ জন মেয়র পদে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ৪১টি। এগুলোর মধ্যে একটি ওয়ার্ডে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী মারা যাওয়ায় ভোট স্থগিত, আরেকটি ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন।
৩৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২টিতেই আওয়ামী লীগে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছেন। দলের নেতারা বলছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কেউ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী, কেউবা বিদায়ী মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী।
দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে কাউকে নির্বাচন করতে বলা হয়নি। স্থানীয় নেতাদের কারও কারও উসকানি থাকতে পারে।মাহবুব উল আলম হানিফ, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক
বিদ্রোহীদের দল থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। মেয়র পদে জয় নিশ্চিত করতে কাউন্সিলরদের বিষয়ে দলের অবস্থান আপাতত নমনীয়। চট্টগ্রাম নগর কমিটির এক জ্যেষ্ঠ নেতা প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের থামাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তা না করায় এখন দলের মেয়র প্রার্থী ও নৌকা প্রতীক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রের উচিত ছিল যাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেছেন, তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা। দলের চেয়ে তাঁরা নিজেদের বেশি বড় মনে করায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করছেন।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন হয় ১৯৯৪ সালে। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বিএনপির প্রার্থী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীনকে পরাজিত করে প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন। এরপর ২০০০ ও ২০০৫ সালে টানা দুবার মেয়র নির্বাচিত হন মহিউদ্দিন। তবে ২০১০ সালে বিএনপি–সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ মনজুর আলমের কাছে তিনি হেরে যান। ২০১৫ সালের নির্বাচনেও মহিউদ্দিন মনোনয়ন চেয়েছিলেন, তবে দলের মনোনয়ন পান আ জ ম নাছির উদ্দীন। এবার নাছির মনোনয়ন চাইলেও মনোনয়ন পান চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. রেজাউল করিম।
দলীয় সূত্র জানায়, সিটি নির্বাচনের পর চট্টগ্রাম নগর কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আগামী কমিটিতে কারা নেতৃত্বে থাকবেন, তার একটি পরীক্ষা হতে যাচ্ছে এই সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার কাউন্সিলরর পদে মহিবুল হাসানের ১৭ জন অনুসারী দলীয় সমর্থন পেয়েছেন, নাছিরের অনুসারীরা পেয়েছেন ৮টি ওয়ার্ডে। আর গতবার বিজয়ী ১৭ কাউন্সিলর এবার দলের মনোনয়ন পাননি। তাঁদের মধ্যে ১২ জন নির্বাচন করছেন। এঁদের ১১ জন নাছির ও ১ জন মহিবুলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এর বাইরে আরও অন্তত ১০টি ওয়ার্ডে মহিবুলের অনুসারীরা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন। তবে দলীয় ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের প্রায় সবাই নৌকা প্রতীকের মেয়র প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরীর পক্ষে প্রচারে মাঠে আছেন।
দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ইসমাইল বলেন, দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা বললেও তা না মেনে নির্বাচন করছেন অনেকেই। এটি সম্পূর্ণ দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কাজ।
একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মোরশেদ আকতার চৌধুরী বলেন, কাউন্সিলর পদে কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। এই মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সুযোগ নেই।
১২ জানুয়ারি পাঠানটুলী ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে বিরোধে খুন হন মহল্লার এক সর্দার। দলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর মহিবুল হাসানের অনুসারী এবং বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল কাদের সাবেক মেয়র নাছিরের অনুসারী।
দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, দলের মনোনয়ন বোর্ড মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এর বাইরে যাঁরা নির্বাচন করছেন, তাঁদের বিষয়ে দল কোনো ছাড় দেবে না। শাস্তি বিভিন্ন রকম হতে পারে।
চট্টগ্রামের ফিরিঙ্গীবাজার ওয়ার্ডের বিদ্রোহী প্রার্থী হাসান মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, এটি স্থানীয় নির্বাচন। এখানে কোনো দলীয় প্রার্থী নেই। আর নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে দল থেকেও কোনো চাপ নেই। মনোনয়নবঞ্চিত করে তাঁকে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত প্রার্থী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিবৃত্ত করতে দল চাইলে আরও কঠোর হতে পারত, কিন্তু হচ্ছে না। আর এই প্রার্থীদের পেছনে নিশ্চয় দলের ভেতর-বাইরে থেকে একটি অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। এতে নৌকা প্রতীক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ৪০ জনের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য নৌকা প্রতীক তেমন কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তাঁদের নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে, এটা সত্য। বিদ্রোহীদের থামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটি কেন্দ্রীয় কমিটির ব্যাপার। আমার কোনো এখতিয়ার নেই। এখনো কয়েক দিন আছে। এর মধ্যে তাঁদের (বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী) বিষয়ে দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়ন করা হবে।’
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মধ্যে ৪০ জনের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে সুপারিশ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ। এরপর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। স্থানীয় দুই নেতা জানান, মেয়র প্রার্থীর পক্ষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ রাখতেই দল চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে। কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে বিভেদ আরও বাড়তে পারে। এতে মেয়র পদে নৌকার ভোটে প্রভাব পড়তে পারে। বিদ্রোহীরা প্রচার করছেন, কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীক নেই। সবার জন্য নির্বাচন উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, দলীয় সমর্থিত প্রার্থীর বাইরে কাউকে নির্বাচন করতে বলা হয়নি। স্থানীয় নেতাদের কারও কারও উসকানি থাকতে পারে। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে অভিযুক্তদের তালিকা কেন্দ্রে এসেছে। দলের সভাপতির সঙ্গে পরামর্শ করে শিগগিরই এ বিষয়ে নির্দেশনা জানাবেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক।
শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকা নিয়ে শঙ্কা আছে বিএনপিতে। ইতিমধ্যেই এক দফা ভোট থেকে সরে দাঁড়াবার হুমকি দিয়েছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী। স্থানীয় বিএনপির দুজন নেতা জানান, প্রচারে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভোটে থাকা নিয়ে সংশয় আছে। এর আগে ২০১৫ সালের সিটি নির্বাচনেও দুপুরের আগেই ভোট থেকে সরে যায় বিএনপি। ভোট থেকে সরে যাওয়ার পেছনে বিএনপির অভ্যন্তরীণ বিবদমান রাজনীতির ইন্ধন থাকতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
জনগণ ঐক্যবদ্ধ। তারা পরিবর্তন চায়। তাই নির্বাচন বানচালের জন্য যা যা করা দরকার, উল্টো আওয়ামী লীগ তা করছে।শাহাদাত হোসেন, বিএনপির মেয়র প্রার্থী
তবে ভোট থেকে সরে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, জনগণ ঐক্যবদ্ধ। তারা পরিবর্তন চায়। তাই নির্বাচন বানচালের জন্য যা যা করা দরকার, উল্টো আওয়ামী লীগ তা করছে। নতুন নতুন মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার এবং বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে হয়রানি করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের প্রচারে হামলা, ভাঙচুর ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে গত কয়েক দিনে বিএনপির শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে চারটি মামলা দায়ের হয়েছে চারটি ভিন্ন থানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই ১৪ জনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগর বিএনপির একাধিক নেতা জানান, আওয়ামী লীগের বিরোধ কাজে লাগিয়ে ভোটে জয়ের ভালো সুযোগ বিএনপির সামনে। কিন্তু ভোটের প্রচারে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় নেতাদের তেমন কোনো উপস্থিতি নেই। দলের মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির নেতারা প্রচারে নামলে নেতা-কর্মীর চাঙা হতেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে চট্টগ্রামের আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এখন চট্টগ্রামে আছেন। আবদুল্লাহ আল নোমান ঢাকার বাসায়, মীর নাছির দুই সপ্তাহ আগে কারাগার থেকে বের হয়ে ঢাকায় আছেন। বিএনপির দুজন নেতা জানান, তাঁরা মাঠে না নেমে চট্টগ্রামের বাসায় অবস্থান করলেও দল লাভবান হতো।
বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নিজে চট্টগ্রামে থেকে নির্বাচন পরিচালনা করছেন। আমানসহ (আমানউল্লাহ আমান) বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এসেছেন। দলের মহাসচিবসহ আরও অনেকে আসতেন। কিন্তু করোনার কারণে মানুষের ক্ষতির কথা ভেবে আসেননি।
স্থানীয় দুজন নেতা জানান, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির রাজনীতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এ কারণেই কেন্দ্রীয় অন্য নেতারা এখানে প্রচারে আসার জন্য খুব একটা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। বিএনপির প্রার্থী নিজেই তাঁর অনুসারীদের দিয়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনী সমন্বয় কমিটি করেছেন। তবে এসব কমিটিতে অন্য নেতাদের অনুসারীদের জায়গা হয়নি।
চট্টগ্রামের ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক, তা চান সাধারণ মানুষসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সভাপতি মুহাম্মদ সিকান্দার খান প্রথম আলোকে বলেন, মানুষ শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশে নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। কিন্তু গত সংসদ নির্বাচনে দেখা গেছে, একটি দল ভোটের মাঠে সক্রিয় ছিল না। আরেকটি দল অন্যদের সহ্যও করতে পারছে না। এই ধরনের মনোভাব থেকে দুই দলকে বেরিয়ে আসতে হবে। মানুষ সংঘাত চায় না।