সংসদ সদস্যদের গাড়ি কিনতে ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ। সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবি জানান।
সাংসদ হিসেবে শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে তা হস্তান্তর করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় সম্প্রতি হারুনুর রশীদকে নিম্ন আদালত কারাগারে পাঠান। পরে উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পান। সোমবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলেন এই সাংসদ।
সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেন, ওয়ান–ইলেভেনের সময় রাজনীতিকদের নামে মামলা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি না পেয়ে শুল্কমুক্ত গাড়ি নিয়ে মামলা হয়।
সংসদ সদস্য হিসেবে চার মাস আগেই গাড়ি কেনার অনুমতি পেলেও টাকা না থাকায় গাড়ি কিনতে পারছে না দাবি করে হারুন বলেন, ইউরোপ আমেরিকার মতো উন্নত বিশ্বে ১ কোটি টাকা নগদ দিয়ে কেউ গাড়ি কেনে না। তারা ব্যাংকঋণের সুবিধা পায়। সচিবদের গাড়ি কেনার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, সচিবেরা গাড়ির অপব্যবহার করছেন। সাংসদদের গাড়ির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে হারুন বলেন, জাতীয় সংসদ সদস্যরা রিকশায় করে গণভবনে যাবেন না, রিকশায় করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়ে যাবেন না। এ জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ করেন যেন, সাংসদদের গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে ঋণ সহায়তা দেওয়া যায়। এতে ৫ বছর ব্যবহার করার পর গাড়িটা বিক্রি করে সাংসদেরা অন্তত মূলধনটা ফিরে পাবেন।
সংসদ সদস্য হিসেবে কেনা গুল্কমুক্ত গাড়ি হস্তান্তরে জেল-জরিমানার সুযোগ নেই মন্তব্য করে হারুনুর রশীদ বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে আনা কোনো গাড়ি হস্তান্তর করা হলে সে ক্ষেত্রে সমুদয় শুল্ক পরিশোধ করতে হবে। এখানে জরিমানা বা জেলের সুযোগ নেই। তিনি আশা করেন উচ্চ আদালত এ বিষয় বিবেচনায় নেবেন।
উভয়সংকটে হারুন
হারুনুর রশীদ বলেন, তিনি এখন উভয়সংকটে আছেন। সম্প্রতি তাঁকে কারাগারে প্রেরণ ও জামিন পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
হারুন বলেন, ‘আমার সাজা হয়েছে, সাথে সাথে দোষ এলো যে, হারুন বিএনপির এমপি। আমি যখন জামিনে মুক্তি পেলাম, তখন দেখা গেল আবার একটা শ্রেণি টেলিভিশনে টক শোতে বলছে, হারুনকে প্রধানমন্ত্রী খুব ভালবাসেন দেখে ওকে ১০ দিনের মধ্যেই জামিন দিয়ে দিল। অর্থাৎ আমি এদিকেও করাতে কাটছি ওদিকেও করাতে কাটছি।’
দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী অসাধারণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন, সারা দেশব্যাপী দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন।