গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতিসহ তিন নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, বাসস্ট্যান্ড দখল, সন্ত্রাসী হামলা ও জীবননাশের হুমকির অভিযোগ এনেছেন জেলার পৌর আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম। আজ বুধবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ছাত্রলীগের এ তিন নেতা হলেন গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ রানা ওরফে এরশাদ, তাঁর চাচাতো ভাই আজিমুদ্দিন কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ হোসেন ও তাঁদের সহযোগী শাওন।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজুল ইসলাম তাঁর দেহে ছুরি দিয়ে আঘাত করার চিহ্ন এবং তাঁর ভাই মনিরুল ইসলাম ওরফে সাগরের ওপর গুলিবর্ষণের চিহ্ন দেখান। তিনি অভিযোগ করেন, এরশাদ, নাহিদ ও শাওন তাঁর ওপর গুলি ছোড়ে এবং ছুরি দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক আহত করে। এ ছাড়া গত ১৮ জানুয়ারি তাঁর ভাই সাগরকে গুলি করেন এরশাদ, নাহিদ ও তাঁদের সহযোগীরা।
হাফিজুল জানান, ছাত্রলীগ নেতাদের হামলার এ বিষয়টি তাঁরা স্থানীয় সাংসদ জাহিদ আহসান রাসেল, পৌর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং জয়দেবপুর থানার পুলিশকে জানিয়েছেন। কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। তবে সাগরের ওপর গুলি ছোড়ার ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। আটক ব্যক্তিরা ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে এরশাদ ও নাহিদের নাম বললেও পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এরশাদ-নাহিদ তাঁদের জীবননাশের হুমকি দিচ্ছেন। সেই ভয়ে তাঁরা প্রায় এক বছর ধরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে তিনি দাবি করেন।
বিভিন্ন সময়ে এই তিন নেতার নির্যাতনের শিকার সুমন রাজভর, তৌহিদ প্রিতু ও মোহাম্মদ মহসিন এই সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, এরশাদ ও নাহিদ তাঁদের বিভিন্ন সময় পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ রানা এরশাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। এর আগে আমি আজিমুদ্দিন কলেজ ছাত্রলীগের জিএস (সাধারণ সম্পাদক) ছিলাম। আমাকে কেন সন্ত্রাসী হামলা করতে হবে? আমি ডাক দিলে তো কয়েক শ মানুষ যখন-তখন চলে আসবে।’ তাঁর দাবি, হাফিজুলের ভাই মনিরুল ইসলাম সাগর গাজীপুরের সবচেয়ে বড় অস্ত্র ব্যবসায়ী।
এরশাদের দাবি, গাজীপুরের সাংবাদিকেরা তাঁর সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করেন। এ জন্য বাধ্য হয়ে হাফিজুল ঢাকায় গিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তবে এরশাদ স্বীকার করেন, তাঁর চাচাতো ভাই নাহিদকে মারধর করায় বিভিন্ন সময় তিনি হাফিজুল ও তাঁর ভাই সাগরকে হুমকি দিয়েছেন।
হাফিজুল ও এরশাদের দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘গতকালই (৪ মার্চ) আমরা হাফিজুল ও এরশাদের দ্বন্দ্ব নিয়ে মহানগর সভাপতি ওয়াজিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আশা করছি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে তা মীমাংসা করে ফেলব।’