গত পাঁচ বছরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি রোগীর সংখ্যা বেড়েছে

মালয়েশিয়ায় ‘হেলথকেয়ার ট্রাভেল ২০২০’ শুরু হয়েছে। কম খরচে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা বিশ্বের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই এই আয়োজন করেছে দেশটি। ম্যাজেস্ট্রি হোটেল, মালয়েশিয়া, ৩১ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো
মালয়েশিয়ায় ‘হেলথকেয়ার ট্রাভেল ২০২০’ শুরু হয়েছে। কম খরচে মানসম্মত চিকিৎসাসেবা বিশ্বের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতেই এই আয়োজন করেছে দেশটি। ম্যাজেস্ট্রি হোটেল, মালয়েশিয়া, ৩১ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো

গত পাঁচ বছরে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা নিতে মালয়েশিয়ার হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে মূল অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে চিকিৎসার উন্নত মান, সংস্কৃতিসহ নানা বিষয়। এ অঞ্চলে সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককের তুলনায় মালয়েশিয়ায় চিকিৎসার খরচ তিন ভাগের এক ভাগ।

মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠেয় তিন দিনের হেলথকেয়ার ট্রাভেল শো–এর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান দেশটির হেলথকেয়ার ট্রাভেল কাউন্সিলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সেরিনা আজিল। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুয়ালালামপুরের ম্যাজেস্ট্রি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির অর্থ উপমন্ত্রী আমিরুদ্দিন হামজা ঘোষণা দেন যে, ২০২০ সালের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা খাত থেকে ১০ বিলিয়ন রিংগিত আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে মালয়েশিয়া। আর লক্ষ্য অর্জনে ‘ইয়ার অব দ্য হেলথকেয়ার ট্রাভেল’ ঘোষণা করেছে মালয়েশিয়া।

আমিরুদ্দিন হামজা বলেন, ‘আমরা দেশের অর্থনীতিতে ১০ বিলিয়ন রিংগিতের জোগান দিতে চাই। বর্তমানে এই খাতে প্রবৃদ্ধি ১৭ শতাংশে গিয়ে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে হাসপাতালের মাধ্যমে এ খাতে ২০১৮ সালে আয় হয়েছে দেড় কোটি রিংগিত। আর এ কারণে দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ হাজারের বেশি।’

সেরিনা আজিল। ম্যাজেস্ট্রি হোটেল, মালয়েশিয়া, ৩১ অক্টোবর। ছবি: প্রথম আলো

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মালয়েশিয়ার চিকিৎসাসেবার মান সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ডের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। মালয়েশিয়া এসব দেশে চিকিৎসক ও নার্সও পাঠায়।

বাংলাদেশের সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সেরিনা আজিল বলেন, মালয়েশিয়ায় সবচেয়ে বেশি চিকিৎসা নিতে আসেন ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, আফ্রিকা মহাদেশ, চীন ও ভারতের নাগরিক। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ, ব্রুনেই ও মধ্যপ্রাচ্য থেকেও স্বাস্থ্যসেবা নিতে অনেকে ভ্রমণ করছেন। দিন দিন এই সংখ্যা বাড়ছে।

ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, মিয়ানমার, চীন ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশ ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে কেন কম লোক চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া ভ্রমণ করছে, এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপমন্ত্রী আমিরুদ্দিন হামজা বলেন, প্রচারের অভাবে এমনটি হচ্ছে। তাদের স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কে প্রচার বাড়লে রোগীর সংখ্যা দিন দিন আরও বাড়বে। তিনি আরও বলেন, মালয়েশিয়ায় চিকিৎসকেরা রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত সময় দেন। সরকারনির্ধারিত ফির চেয়ে বেশি ফি কোনো হাসপাতাল নিতে পারে না। সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককের চেয়ে এখানে থাকা ও খাওয়ার খরচও অনেক কম।

সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ায় ভ্রমণ–সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন হাসপাতালের প্রতিনিধি ও চিকিৎসক, বাংলাদেশসহ ৮টি দেশের শতাধিক সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন।