গণিত কোনো ভয়ের বিষয় নয়। এটি আনন্দের সঙ্গে শেখার বিষয়, জানার বিষয়। গণিতভীতিকে পেছনে ফেলে বিশ্বজুড়ে বিজয়ের পতাকা উড়তে শুরু করেছে। একজন গণিতবিদের স্বর্ণ জয়ের মধ্য দিয়ে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ জয়যাত্রা শুরু করেছে। এই বিজয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে শিক্ষার্থীদের বেশি বেশি গণিতচর্চা করতে হবে।
গতকাল শুক্রবার বগুড়ায় অনুষ্ঠিত ডাচ্বাংলা ব্যাংক-প্রথম আলো গণিত অলিম্পিয়াডের আঞ্চলিক উৎসবে এসব কথা বলেন অতিথিরা। সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে শুরু হয় দিনব্যাপী এই গণিত উৎসব। এটি শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়।
এবারের আসরে বগুড়া ছাড়াও সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলার অন্তত ৭৫০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সকালে উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ।
‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান নিয়ে সকালে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করা হয়। এই পর্বে জেলা প্রশাসক ছাড়াও কবি ও সাহিত্যিক বজলুল করিম বাহার, ডাচ্বাংলা ব্যাংক বগুড়া শাখার ব্যবস্থাপক ফজলুল কবির এবং সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন বক্তব্য দেন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, গণিত অনেকের কাছে কঠিন মনে হয়। তবে সহজভাবে নিলে গণিত ভুল উত্তর দেয় না। গণিতভীতি দূর করতে গণিত উৎসব একটি অসাধারণ উদ্যোগ। গণিতকে নিয়ে আজ উৎসবের দিন। শিক্ষার্থীদের জন্য আজ আনন্দের দিন।
বজলুল করিম বাহার বলেন, ‘এই আয়োজন অসংখ্য পুরস্কার এনেছে। দেশকে সেরা গণিতবিদদের তালিকায় নিয়ে গেছে। গণিত উৎসব আয়োজনের কারণে গণিত এখন আনন্দের পাঠে পরিণত হয়েছে। গণিত নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন দেখানোর কাজটি করার জন্য প্রথম আলোকে ধন্যবাদ জানাই।’
উদ্বোধনের পর সোয়া ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা মাঠে থাকা বিভিন্ন ধরনের স্টল থেকে গণিতের বই ও বিজ্ঞানের মজার মজার জিনিসপত্র সংগ্রহ করে নেয়।
গণিত জয়ের গান ‘আমরা করব জয়’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। এই গান পরিবেশন করে সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানে মাহবুব হাসানের নৃত্য পরিচালনায় আমরা কজন শিল্পীগোষ্ঠী বগুড়ার নৃত্যশিল্পীরা দলীয় ও একক নৃত্য পরিবেশন করেন।
প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য মণিষা বসাকের সঞ্চালনায় শুরু হয় প্রশ্নোত্তর পর্ব। বুদ্ধিদীপ্ত প্রশ্নের জন্য পুরস্কার হিসেবে শিক্ষার্থীদের কিশোর আলো ও বিজ্ঞান চিন্তা দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্য দেন সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাজাহান আলী, একই কলেজের গণিত বিভাগের শিক্ষক মো. মাহাতাব হোসেন মণ্ডল ও মো. আলম মণ্ডল, রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ফারুক আহমেদ ও একই কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক রফিকুল ইসলাম।