গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতে হবে

গণহত্যা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা বক্তব্য দেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মীরা
ছবি: সংগৃহীত

১৯৭১ সালের গণহত্যার দায়ে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া এবং দেশটির কাছ থেকে বাংলাদেশের পাওনা আদায়ের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক সংগঠন আনন্দন। শুক্রবার বিকেলে ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানান আলোচকেরা। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে প্রতিবাদী গান ও মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়।

আলোচনায় সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদবিরোধী মঞ্চের সদস্যসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, কেউ সন্দেহ করেন ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়নি। ভারতের আশ্রয়শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ব্যক্তিরা জানেন, লাখ লাখ মানুষ সেখানে কলেরায় মারা গেছে। কিন্তু সে কথা সামনে আনা হয় না। তা হারিয়ে গেছে ইতিহাসে। এর পেছনে শাসকদেরও দায় আছে।

নুর মোহাম্মদ তালুকদার আরও বলেন, মেট্রোরেলের মতো অনেক উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। কিন্তু এসবের মুনাফা কার কাছে যাচ্ছে? শ্রমিকেরা কি সুবিধা পাচ্ছে? যারা কর দিচ্ছে, তারা কী পাচ্ছে? মুক্তিযুদ্ধ একবার হয়েছে। আবার সময় এসেছে। সময় বেশি দূরে নাই। শুধু ডাক দেওয়ার লোকের অভাব।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জয়ন্তী রায় বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয়েছে। জীবন থেকে কালরাত্রি যায়নি। ধর্মান্ধরা মানুষকে মারছে, নিজেরা মরছে। একদল ধনী হচ্ছে, অন্য দল দরিদ্র হচ্ছে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, রুয়ান্ডা গণহত্যাসহ বিভিন্ন দেশে গণহত্যার বিচার হচ্ছে। এ দেশে নয় মাসেই হত্যা করা হয়েছে ৩০ লাখ লোককে। অথচ বাংলাদেশ গণহত্যার স্বীকৃতি এখনো পুরোপুরি পায়নি। এটি নিশ্চিত করতে হবে।

গণহত্যায় নিহতদের উদ্দেশে মোমবাতি প্রজ্বলন

আলোচনা সভার সভাপতি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রাজিয়া সামাদ ডালিয়া বলেন, এত বড় গণহত্যার পর পাকিস্তান এখনো মাথা নত করেনি। তাদের কালো হাত এখনো এ দেশে আছে। তাঁরা মাঝেমধ্যেই হামলা করছে। পাকিস্তানিদের ক্ষমা চাইতে হবে।

ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যার অজস্র প্রমাণ আছে দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যমে। আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সাংস্কৃতিক সংগঠনের আনন্দন নির্বাহী সমন্বয়ক এ কে আজাদ প্রমুখ।