গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী শিশিরের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর পান্থকুঞ্জে এ হামলা হয়। শিশির গণজাগরণ মঞ্চের কামাল পাশার নেতৃত্বাধীন অংশের কর্মী। তিনি এ হামলার জন্য গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান এইচ সরকারের নেতৃত্বাধীন পক্ষকে দায়ী করেছেন।
৩ এপ্রিল গণজাগরণ মঞ্চের দুই পক্ষের কর্মীদের মারামারির ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলা হয়। এর পরদিন দুই অংশকেই লাঠিপেটা করে শাহবাগ থেকে তাড়িয়ে দেয় পুলিশ।
গতকাল বিকেলে কামাল পাশার পক্ষের কর্মীরা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফোন করে জানান, তাঁদের এক কর্মী হামলার শিকার হয়েছেন। তাঁদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে খালি গায়ে শুয়ে থাকা এক যুবককে দেখা যায়। তিনি নিজের নাম বলেন শিশির। তবে তাঁর সঙ্গে থাকা বন্ধুরা জানান, শিশিরের পুরো নাম হাসিবি শহীদি শিশির।
শিশির বলেন, বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কারওয়ান বাজারের কাছে পান্থকুঞ্জ পার্কের পাশে ব্যক্তিগত গাড়িতে আসা ১০-১২ জন দেশি অস্ত্র, হকিস্টিক নিয়ে তাঁর ওপর হামলা চালায় এবং গাড়িতে তুলে নিয়ে যেতে চায়। ধারালো অস্ত্রে তাঁর বাঁ হাতের দুটি আঙুল কেটে যায়। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করেন। হামলাকারীদের মধ্যে তিনি নবেন্দু সাহা জয়সহ চারজনকে চিনেছেন।
যোগাযোগ করা হলে গণজাগরণ মঞ্চের ইমরান সমর্থক অংশের কর্মী নবেন্দু এ অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সনাতনি পঞ্জিকা অনুসারে মঙ্গলবার পয়লা বৈশাখ হওয়ায় তিনি তা উদ্যাপন করতে নারায়ণগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম বলেন, শিশির পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগ দেননি। তাঁর বাঁ হাতে কোপের দাগ ও পায়ে ভোঁতা অস্ত্রের (হকিস্টিক) আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ওই সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন কামাল পাশা, এফ এম শাহীন ও মেহেদী হাসান। কামাল পাশা এই হামলার জন্য ইমরানের নেতৃত্বাধীন অংশকে দায়ী করেন। দুজন ব্লগারের নাম উল্লেখ করে তিনি তাঁদের বিরুদ্ধে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আনেন।
অবশ্য ইমরান এইচ সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন অহিংস। এ ধরনের ঘটনার কোনো সুযোগ নেই। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মসূচির সঙ্গে এ ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এখানে গণজাগরণ মঞ্চকে জড়ানো অনাকাঙ্ক্ষিত। হামলাকারী হিসেবে যে নবেন্দু সাহার কথা বলা হচ্ছে, তিনি ঢাকাতেই নেই।