করোনা মহামারির প্রভাবে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী দেশে ফিরে এসেছেন। তাঁদের ৮৫ শতাংশ পুরুষ কর্মী। ফিরে আসা এমন কর্মীরা গড়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার বেতন হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ কর্মীরা গড়ে ১ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ও নারী কর্মীরা গড়ে ৯৭ হাজার টাকা বেতন হারিয়েছেন।
আজ বুধবার অনলাইনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়। এমন তথ্য জানিয়েছে অভিবাসন খাতের বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সম্মিলিত সংগঠন সিভিল সোসাইটি ফর মাইগ্র্যান্টস (বিসিএসএম) ও বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান রামরু। ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের ওপর যৌথভাবে গবেষণা করে এমন তথ্য পেয়েছে তারা। গবেষণা জরিপে অংশ নেওয়া প্রত্যেক কর্মীর ফিরে আসার নথি যাচাই করা হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের ৬টি দেশ থেকে ফিরে আসা ১ হাজার ১৬০ জন প্রবাসী কর্মীর সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষণাটির সারাংশ তুলে ধরেন বিসিএসএমের চেয়ার ও রামরুর নির্বাহী পরিচালক সি আর আবরার। তিনি বলেন, চাপ দিয়ে বিপদাপন্ন কর্মীদের দেশে ফিরতে বাধ্য করা হয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কর্মী পাঠানো দেশটিকে চাপ দেওয়া হয়েছে তাদের কর্মী ফিরিয়ে নিতে। আন্তর্জাতিক কোনো মানদণ্ড না মেনে অনৈতিকভাবে এসব করা হয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনার প্রভাবে গত বছরের ফেব্রুয়ারির পর ফিরে আসা কর্মীদের মধ্যে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। যাঁরা চাকরিতে ছিলেন, তাঁদের ৩৮ দশমিক ৭ শতাংশ কর্মীর বেতন কমেছে আগের চেয়ে। আর দেশে ফিরে আসার আগে নিয়মিত বেতন পাননি ৬৭ দশমিক ৭ শতাংশ প্রবাসী কর্মী। তবে ফেরার আগে ৯২ শতাংশ কর্মী কোথাও কোনো অভিযোগ জানিয়ে আসেননি।
সুপারিশ তুলে ধরতে গিয়ে সি আর আবরার বলেন, অভিবাসী কর্মীদের নিরাপত্তায় কাঠামোগত দুর্বলতা আছে। মহামারির সময় আরও চরমভাবে এ দুর্বলতা উন্মোচিত হয়েছে। কর্মীদের হারানো বেতন ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে সোচ্চার হতে হবে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ৬৩ শতাংশ কর্মী দেশে ফিরতে বাধ্য হয়েছেন। আবার ২৯ শতাংশ কর্মী দেশে ছুটিতে এসে আর ফিরে যেতে পারেননি। তবে গবেষণার পর তাঁদের কেউ কেউ হয়তো কর্মস্থলে ফিরে গেছেন, যা এখানে আসেনি।
বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম বলেন, তাঁদের প্রতিষ্ঠান ফিরে আসা ২৪৮ জন কর্মীর ওপর একটি গবেষণা চালিয়েছে। এতেও ৬০ শতাংশ কর্মী বকেয়া বেতন রেখে ফিরে আসার কথা বলা হয়েছে। বকেয়া আদায়ের দাবি আন্তর্জাতিক আন্দোলনে নিয়ে যেতে হবে।