খাদ্যসহায়তা দিতে গিয়ে জানা গেল কোভিড রোগীরা ঢাকায়

কোভিডে আক্রান্ত হয়ে অবরুদ্ধ পরিবারগুলোর জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিতে গিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের একটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়ির কোভিডে আক্রান্ত দুজন দুই দিন আগেই ঢাকায় চলে গেছেন।


ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের করোনার কোনো উপসর্গ নেই, তাঁদের দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করা হচ্ছে না। ১৪ দিন পর তাঁদের করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়। ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ওই দুই ব্যক্তিকে করোনামুক্ত ঘোষণা করার। স্বাস্থ্যকর্মীরা যাওয়ার আগেই ওই দুজন বাড়ি ছেড়েছেন।

শরীয়তপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্র জানায়, চিকন্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা এক রিকশাচালক পরিবার নিয়ে খিলগাঁও এলাকায় থাকেন। ঈদে গ্রামে এলে স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে। ২৫ মে জানা যায়, ওই ব্যক্তির স্ত্রী (৩৫) ও তাঁর ছেলে (১৬) করোনা পজিটিভ। এরপর তাঁরা বাড়িতেই কোয়ারেন্টিনে ছিলেন।

এদিকে সদর উপজেলা প্রশাসন কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তির অবরুদ্ধ পরিবারের সদস্যদের খাদ্যসহায়তা দেয়। তারই অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার আনোয়ারার বাড়িতে খাদ্যসহায়তা নিয়ে যায় বিডিক্লিন নামে একটি সংগঠন। বিডিক্লিনের সমন্বয়ক মাসুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ওই বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাননি। তাঁদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে জানান, দুই দিন আগেই তাঁরা ঢাকায় চলে গেছেন।

মুঠোফোনে জানতে চাইলে ওই নারী (৩৫) বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই সুস্থ ছিলাম। আমাদের কোনো ধরনের উপসর্গ ছিল না। করোনা শনাক্ত হওয়ার পর স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছিলেন। এরপর আর তাঁরা আসেননি। ১৪ দিন হয়ে যাওয়ায় আমরাই লকডাউন ভেঙে ফেলেছি, তাই পরিবার নিয়ে ঢাকায় চলে এসেছি।’

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহাবুর রহমান শেখ প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন অসহায় ও কর্মহীন মানুষের বাড়িতে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিচ্ছে। পাশাপাশি করোনায় আক্রান্ত অবরুদ্ধ পরিবারগুলোকেও সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আক্রান্ত হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে কেউ সুস্থ হলে স্বাস্থ্য বিভাগের উচিত তাঁদের সঙ্গে সমন্বয় রাখা। তাহলে আক্রান্ত কেউ নিজের ইচ্ছায় লকডাউন ভাঙতে পারবেন না।