খাগড়াছড়িতে বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশন (সিএইচটি কমিশন) গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, বুদ্ধমূর্তি পুনঃস্থাপন এবং একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনেরও দাবি করেছে সংগঠনটি। আজ বুধবার দেওয়া এক বিবৃতিতে এই দাবি করে পার্বত্য চট্টগ্রামের মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠনটি।
গতকাল মঙ্গলবার খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার হাফছড়ি ইউনিয়নের কুকিছড়া এলাকায় নবনির্মিত জেতবন বৌদ্ধ বিহারে রাতের আঁধারে হামলা করে বুদ্ধমূর্তি ও স্থাপনা ভাঙচুর করে দৃর্বৃত্তরা।
আজ সিএইচটি কমিশনের দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, বৌদ্ধ ভিক্ষুরা তিন মাস বর্ষাবাস পালনের পর প্রবারণা পূর্ণিমায় তাঁদের কঠিন তপস্যার সমাপ্তি ঘটান। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রবারণা পূর্ণিমার মাত্র এক দিন আগে রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা কুকিছড়ার বৌদ্ধ মন্দিরের স্থাপনা ও বুদ্ধমূর্তি ভেঙে ফেলে। এ ঘটনা নিঃসন্দেহে বৌদ্ধধর্মাবলম্বীসহ দেশের সব অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষের ওপর চরম আঘাত ও অবমাননাকর। সংবিধানে অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্রে সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিতের কথা বলা হলেও এরূপ বর্বর ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে দেশে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের এখনো স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত হয়নি।
বিবৃতিতে বলা হয়, কুকিছড়ায় বুদ্ধমূর্তি ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা কোনোভাবেই দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুণ্ন থাকুক সেটা চায় না। তাই তারা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে অস্থিতিশীল রাখতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ সম্প্রাদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমাকে বানচাল করে দিতে বুদ্ধমূর্তি ভেঙে দিয়েছে।
বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের অবিলম্বে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা ও সত্বর বুদ্ধমূর্তিটি যথাস্থানে পুনঃস্থাপন করার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে সরকারের কাছে এ ঘটনায় একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনেরও দাবি করে কমিশন। স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা যাতে নিরাপদে প্রবারণা উৎসবসহ সব উৎসব নিরাপদে পালন করতে পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সিএইচটি কমিশনের তিন কো চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, এলসো স্টামাতোপৌলৌ ও মির্না কানিংহাম কেইন। বিজ্ঞপ্তি