রোহিঙ্গাদের নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছেন জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছি, যাতে তারা ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে। ক্যাম্পের ভেতর যেন অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সেই ব্যবস্থাও নিচ্ছি।’
বাংলাদেশ পুলিশ উইমেন অ্যাওয়ার্ড ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ওই অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘নাফ নদীর তীরে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার অপেক্ষায় ছিল, সেই দৃশ্যটি নিশ্চয়ই মনে আছে। এখন আমরা এই রোহিঙ্গা নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে আছি। তারা যেকোনো জায়গায় চলে যাচ্ছে। তবে তারা চলে গেলেও নিরাপত্তা বাহিনী আবার তাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসছে।’
অল্প সময়ের মধ্যে লাখ লাখ রোহিঙ্গা চলে এসেছে উল্লেখ করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, এটি তাঁদের ধারণার বাইরে ছিল। ধারণা থাকলে আগে থেকে একটা ব্যবস্থা নিতে পারতেন। এখনো তাঁরা সেরকম কোনো ব্যবস্থা করতে পারেননি। তাদের (রোহিঙ্গা) জন্য একটা কাঁটাতারের বেড়া করার কথা ছিল, সেটির কাজও সম্পন্ন করতে পারেননি।
বরগুনায় দিনের বেলায় স্ত্রীর সামনে স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনাকে দুঃখজনক মন্তব্য করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কেন ঘটেছে তদন্ত করে জানা যাবে। পুলিশ বসে নেই। দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকি যারা জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে। পুলিশের দক্ষতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। এই পুলিশকে যদি ১০ বছর আগের পুলিশ মনে করে কেউ, তাহলে ভুল করবে। আমাদের পুলিশ অনেক সক্ষম ও অনেক দক্ষ।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহাবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সাংসদ ওয়াসিকা আয়শা খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ সভাপতি আমেনা বেগম প্রমুখ।
পরে বিকেলে নগরের আরেকটি কমিউনিটি সেন্টারে কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড পেলেন ১০ পুলিশ কর্মকর্তা
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ উইমেন পুলিশ অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় ১০ পুলিশ কর্মকর্তাকে। দেশে ও দেশের বাইরে সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করার জন্য এদের পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন: পুলিশ সদর দপ্তরে কর্মরত এআইজি (স্বাস্থ্য ও শিক্ষা) তাপতুন নাসরীন, র্যাব-৮ বরিশালের অধিনায়ক আতিকা ইসলাম, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা, পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত পুলিশ সুপার মাহফুজা বেগম, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মেট্রো (উত্তর) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মাহফুজা লিজা, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফাহমিদা হক শেলী, নারী সহায়তা কেন্দ্র বরগুনায় কর্মরত উপপরিদর্শক (এসআই) জান্নাতুল ফেরদৌস ও জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ রাজারবাগ ঢাকায় কর্মরত নুসরাত জাহান। এ ছাড়া প্রথমবারের মতো নারী নির্যাতন প্রতিরোধে ভূমিকা রাখায় চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন পুরস্কার পান। তাঁদের প্রতে৵ককে নগদ অর্থ, সনদ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।