কুলাউড়া রেল দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত শতাধিক

ছবি : কল্যাণ প্রসূন
ছবি : কল্যাণ প্রসূন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় সিলেট থেকে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এখন পর্যন্ত তিন নারীসহ অন্তত চারজন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। মৌলভীবাজারের জেলা পুলিশ সূত্র প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল এলাকায় উপবন এক্সপ্রেসের ১০টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। এর মধ্যে একটি কালভার্টের ওপর থেকে ছিটকে খালে পড়ে।

সিলেট আখাউড়া রেলপথের শমশেরনগর স্টেশন সূত্রে জানা যায়, রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকগামী রেল আন্তনগর উপবন এক্সপ্রেস বরমচাল স্টেশন অতিক্রম করে কুলাউড়া আসার পথে বড়ছড়া খালের ওপর কালভার্টের কাছাকাছি আসলে পেছনে থাকা ১০টি বগি সামনের ৭টি বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত চারজন নিহত হয়েছেন। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন নারী, একজন পুরুষ। লাশগুলো পুলিশের হেফাজতে আছে। রাশেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

ছবি : কল্যাণ প্রসূন

মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের তরফ থেকে নিহত এক নারীর পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি কুলাউড়ার কাদিপুর ইউনিয়নের গুপ্ত গ্রামের বাসিন্দা বারি মিয়ার স্ত্রী মনোয়ারা পারভীন (৪৫)। পরাভীনের স্বজনেরা তাঁর লাশ শনাক্ত করেছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্ত‌রের নিয়ন্ত্রণকক্ষ জা‌নি‌য়ে‌ছে, রাত ২টা পর্যন্ত কুলাউড়া উপ‌জেলা স্বাস্থ্য কম‌প্লে‌ক্সে জরু‌রি বিভা‌গে চি‌কিৎসা নি‌য়েছেন ৬০ জন। শরী‌রের বি‌ভিন্ন জায়গায় মারাত্মক আঘাত থাকায় ২০ জন‌কে সি‌লেট ওসমানী মে‌ডি‌কেল ক‌লে‌জে পাঠা‌নো হ‌য়ে‌ছে। হতাহ‌তের সংখ্যা আরও বাড়‌তে পা‌রে।

মাসুম আহমেদ নামে একজন যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, তারা ছিলেন রেলের কেবিনে। প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি। অনেক সময় আটকে থাকার পর রেল থেকে নেমে দেখতে পান প্রচুর লোকজন। দেখতে পান পেছনের দিকে কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে গেছে। তখন অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিসও আসে। তারা তখন শুনতে পান একাধিক লোক মারা গেছেন। তবে তিনি মরদেহ দেখেননি। আহত হয়েছেন অনেকে। ট্রেনে অনেক যাত্রী ছিল বলে জানান তিনি।

বরমচাল মানবসেবায় রক্তদান সংস্থা নামের এক স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য মন্টু বর্ধন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পরপরই শত শত মানুষ আক্রান্তদের উদ্ধারে ছুটে আসে। তিনি এ পর্যন্ত তিনটি লাশ দেখেছেন বলে জানান মন্টু।

দুর্ঘটনায় আহতদের উদ্ধারকাজ অব্যাহত আছে। উদ্ধারকাজে অংশ নিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিট। উদ্ধারকাজে স্থানীয় লোকজনও সহায়তা করছে।