দেখে আসেন, বাজারে গোপালের ‘গ’-ও খুঁজে পাবেন না। শুক্রবার সকালে গোপালভোগ আমের খোঁজ নিতে চাইলে এ কথা বললেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের আম ব্যবসায়ী সুকুমার প্রামাণিক। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেল, আমের বাজারে বিক্রি হচ্ছে আলু। আমের মৌসুম ছাড়া এখানে পাইকারি বিক্রেতারা আলু বিক্রি করে থাকে। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা আমের ফড়িয়া বিক্রেতারা বলেন, ‘আমরা তীর্থের কাকের মতো দাঁড়িয়ে আছি “গোপাল”–এর জন্য। কিন্তু গোপালের দেখা নেই। আমাদের কর্মও শুরু করতে পারছি না।’ শুক্রবার সকালে সুকুমারকে দেখা গেছে তরিতরকারি বিক্রি করতে।
এখানকার আম ব্যবসায়ীরা গোপালভোগ আমকে সংক্ষেপে ‘গোপাল’ বলে থাকেন।
অপরিপক্ব আম বাজারে আনা ঠেকাতে বিভিন্ন বিখ্যাত সুস্বাদু জাতের আম বাজারজাত শুরু করার তারিখ বেঁধে দেয় জেলা প্রশাসন। সে হিসাবে শুক্রবার ছিল গোপালভোগ আম বাজারজাত করার শুরুর দিন। কিন্তু কোথাও গোপালভোগের দেখা নেই। এমনকি অন্য জাতের আমও বাজারে খুব বেশি নেই।
আমের রাজধানী যদি চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়, তবে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে কানসাট। কেননা, এখানেই বসে দেশের সবচেয়ে বড় আমবাজার। সকালে বিক্রি হয় কাঁচা আর বিকেলে বিক্রি হয় পাকা আম। কানসাটে তাই অপেক্ষা করা হলো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত। কিন্তু বাজারে কোনো আমের দেখা নেই।
কানসাট আম আড়তদার সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুনের প্রথম সপ্তাহের আগে কানসাটে আমের বাজার জমবে না।’ একই কথা জানালেন কানসাট আম আড়তদার ব্যবসায়ী সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী এমদাদ।
তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদরের আমের আড়তদার কালু খোকা বললেন, ‘আমার আড়তে দুজন ব্যাপারী বাইরে থেকে এসেছেন। তাঁরা গোপালভোগ আম চাইছেন। কয়েকজন বাগানওয়ালাকে বলেছি, শনিবার আম নিয়ে আসবে। শনিবার থেকে বাজারে গোপালভোগ দেখতে পাবেন।’
কয়েকজন আম ব্যবসায়ী ও চাষি জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম এবার ‘নামলা’। অর্থাৎ, কিছুটা দেরিতে পাকবে। কারণ, এবার মুকুল এসেছে দেরিতে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের (আম গবেষণা কেন্দ্র) ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শরফ উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, এপ্রিল ও মে মাসের ১০-১২ দিন আকাশ ছিল মেঘলা। তাপমাত্রাও ছিল ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। আম ঠিকমতো রোদ পায়নি। এ জন্য আম পাকতে এক সপ্তাহ দেরি হচ্ছে। তবে দুই–তিন দিনের মধ্যে গোপালভোগ আম বাজারে আসতে পারে।