এই যে পারিবারিক বন্ধন আলগা হয়ে যাচ্ছে, বাড়ছে বাবা-মায়ের সঙ্গে দূরত্ব—কেন হচ্ছে? বাবা-মা দুজনে কাজ করেন বলেই এমনটা হচ্ছে? ঠিক এই প্রশ্নটাই ছিল তরুণদের জন্য। বলা যায়, তরুণদের প্রায় সবাই এমনটাই মনে করে।
সব ধরনের তরুণেরাই এ নিয়ে প্রায় একমত বলা চলে। অর্থাৎ তারা মনে করে, বাবা-মা দুজনেই কাজ করেন বলে সন্তানদের সঙ্গে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে। আর তাতে পারিবারিক বন্ধন আলগা হয়ে যাচ্ছে।
জরিপে অংশ নেওয়া ৮৯ দশমিক ১ শতাংশ তরুণই এমনটা মনে করে। তাদের মধ্যে আবার ৪৬ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণের এ বিষয়ে কোনো দ্বিমতই নেই। এ বিষয়ে তারা পুরোপুরি একমত। আর ৪২ দশমিক ৩ শতাংশ বলেছে, তারা এর সঙ্গে কিছুটা হলেও সম্মত।
এর বাইরে সাড়ে ৮ শতাংশ অবশ্য এর সঙ্গে একমত হয়নি। তাদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ এই ধারণার সঙ্গে একেবারেই একমত নয়। অর্থাৎ তারা কর্মজীবী বাবা-মাকে একেবারেই দায়ী বলে মনে করে না। সাড়ে ৬ শতাংশ কিছুটা দ্বিমত। এ ছাড়া এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি ২ দশমিক ৫ শতাংশ তরুণ।
এখন পর্যন্ত দেশের শ্রমশক্তিতে মেয়েদের অংশগ্রহণ ছেলেদের তুলনায় কম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, শ্রমশক্তিতে ১৫ থেকে ২৯ বছর পর্যন্ত বয়সী মানুষের সংখ্যা ২ কোটি ৭ লাখ ৯৮ হাজার। তাদের মধ্যে ১ কোটি ৩৭ লাখ ২৮ হাজার পুরুষ হলেও মেয়েদের সংখ্যা মাত্র ৭০ লাখ ৭০ হাজার। সুতরাং এমনিতেই দেশে মেয়েদের জন্য কাজ করার সুযোগ কম। তবে সাম্প্রতিক সময়ে আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণ বাড়তে শুরু করেছে। আরও একটু ভালো থাকার আশায়, সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় অনেক মা-ই কাজ করতে যাচ্ছেন। মায়েদের আয় বাড়তি স্বাচ্ছন্দ্য দিলেও সন্তানেরা আবার এ কারণে দূরত্ববোধও করে। জরিপ বিশ্লেষণে এমনটাই দেখা যাচ্ছে।
জরিপ অনুযায়ী, কর্মজীবী বাবা-মায়ের কারণে সন্তানদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ার কথা শহরের তরুণেরা যেমন বলেছে, তেমনি গ্রামের তরুণেরা একই মত দিয়েছে। আবার ছেলে-মেয়েদের মধ্যেও এ বিষয়ে ঐকমত্য রয়েছে। এমনকি বয়সের দিক থেকেও এ বিষয়ে সবাই একমত। অর্থাৎ ১৫ থেকে ৩০ বছর পর্যন্ত প্রায় সবাই এমনটাই মনে করছে।