পাবনার গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র ও দলবল নিয়ে ‘মহড়া’র নেতৃত্বে থাকা সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন এর আগেও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে মহড়া দিয়েছেন। কর্মকর্তাদের কয়েকবার লাঞ্ছিত করেছেন বলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।
সম্প্রতি গণপূর্ত বিভাগে শটগান নিয়ে ‘মহড়া’ দেওয়ার পর উঠে এসেছে এসব তথ্য। স্থানীয় ঠিকাদার ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফারুক হোসেনের নাইস কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি একসময় বিদেশে থাকতেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে ফিরে ঠিকাদারি শুরু করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ড, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও গণপূর্ত বিভাগসহ প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে তিনি কাজ করেন। বর্তমানে তিনি গাড়ি–বাড়িসহ অঢেল সম্পদের মালিক।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ মে দুপুরে লোকবল নিয়ে এলজিইডি কার্যালয়ে যান ফারুক হোসেন। তিনি এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী ও দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি আব্দুল খালেকের কক্ষে ঢোকেন। ফরিদপুর উপজেলার একটি রাস্তা সংস্কারের সাড়ে তিন কোটি টাকার কাজ পাইয়ে দিতে ওই কর্মকর্তাকে চাপ দেন ফারুক। নিয়ম মেনে আবেদন ও দরপত্র দাখিলের কথা বলতেই রেগে যান তিনি। ওই কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করেন। তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।
এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল খালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘটনার পর প্রভাবশালী দুই জনপ্রতিনিধি বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করলে আর মামলা করিনি।’
গত বছরের ১৯ অক্টোবর ওই আওয়ামী লীগ নেতা জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে মহড়া দেন। তিনি হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ে ঢুকে সুপারিনটেনডেন্ট মুশফিকুর রহমানকে লাঞ্ছিত করেন। পরে ওই কর্মকর্তা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পাবনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
মুশফিকুর রহমান জানান, ওই দিন বিকেলে কার্যালয়ে ঢুকে তিনি গালিগালাজ করেন এবং তাঁকে মারতে উদ্যত হন। পরে তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হোসেন বলেন, ‘প্রকৌশলী আব্দুল খালেকের সঙ্গে আমার কাজ নিয়ে কোনো ঝামেলা হয়নি। কাজ করতে গেলে সামান্য ভুল–বোঝাবুঝি হয়। ক্ষমা চেয়ে নিয়েছি।’ অল্প সময়ে কোটি টাকার মালিক হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কোনো টাকার মালিক হইনি। কাজ করে কষ্ট করে টাকা রোজগার করেছি।’